হাবিবুর রহমান নাসির, ছাতক সুনামগঞ্জ ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বিয়ের অাগে সন্তান জন্মের ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়ার পরদিন বিবাহ সম্পন্ন হয়। অবশেষে সন্তানকে কূলে নিয়ে ২য় স্বামীর বাড়িতে পাঁ রাখলেন আমিনা (ছদ্মনাম)।
জানা যায়, দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের ঘিলাছড়া গ্রামের কলমধর অালী ২পুত্র ও ২কন্যা সন্তান জন্ম দিয়ে প্রায় ৮বছর অাগে পরপারে চলে গেছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর পরিবারের হাল ধরেন স্ত্রী আমিনা। অত্যন্ত কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে জীবন যাপন শুরু করেন তিনি। এর মধ্যে তাকে হঠাৎ নজরে পড়ে একই গ্রামের মৃত চান্দালীর পুত্র, ৬ সন্তনানের জনক, নরসিংপুর বাজারের চা ব্যবসায়ি ধন মিয়ার। দেখা-সাক্ষাত, মন দেয়া নেয়ার এক পর্যায়ে তাদের অবৈধ দৈহিক মিলনের ফসল হিসেবে অন্তসত্তা হয়ে পড়েন আমিনা। বিয়ের জন্য তাকে বার বার চাঁপ সৃষ্টি করলে এড়িয়ে চলতে থাকে। এদিকে গর্ভধারণের প্রায় ৯ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ২৩ জানুয়ারি গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে বিষয়টি অবহিত করে আমিনা। ওইদিন মুরুব্বি ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অভিযুক্ত ধন মিয়াকেও ডাকা হয়।
এক পর্যায়ে ধন মিয়া তার মাধ্যমে আমিনার সর্বনাশের কথা স্বীকার করে বিয়ে করারও প্রতিশ্রুতি দেয়। উপস্থিত মুরব্বিরা ২৪ জানুয়ারি বিয়ের দিন তারিখ ধার্য্য করেন। কিন্তু সফিনার এ দিন প্রসব ব্যথা দেখা দেয়ায় বিয়ের অায়োজন পন্ড হয়ে যায়। ২৫ জানুয়ারি ফের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আমিনা কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই দিন রাত প্রায় সাড়ে ৮টার দিকে আমিনার কূলে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান।
মা ছেলে সুস্থ্য থাকায় ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে গ্রামে চলে যান আমিনা। রাত প্রায় ৯টার দিকে গ্রামের মুরব্বি ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ফের বৈঠক বসে। বৈঠকে স্থানীয় নিকাহ রেজিষ্টার কয়ছর অাহমদের সহকারি মাসুম অাহমদের মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা কাবিনমুলে চা ব্যবসায়ি ধন মিয়ার সাথে আমিনার বিয়ে দেয়া হয়। বিয়েতে ময়না মিয়াকে উকিল, লয়লুছ খান ও ছমছুল হককে স্বাক্ষি নিযুক্ত করা হয়। অাকদ সম্পন্ন করেন দিনেরটুক জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মুজাম্মিল হোসেন।
এর অাগে বৈঠকের সভাপতি কর্তৃক আমিনা ও ধন মিয়াকে বেত্রাঘাত করে শাস্তি দেন বৈঠকের সভাপতি মুরব্বি ইসলাম খান।
বৈঠকে ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান ও ইউপি সদস্যা মমতাজ বেগম, বাবুল মিয়া, লয়লুছ খান, অালাল মিয়া, বতুল্লাহ, অাতাউর রহমান, ছায়াদুর রহমান, ছমির উদ্দিন, অাবদুল্লাহ, রুহুল অামীন, সুহেল মিয়া, খছরু মিয়া, জয়নাল, মতিন, অালমগীর, অালমাছ, অাবদুর রউফ, অাল অামীন, রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, সুরত খানসহ গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিয়ে সম্পন্নের পরেই ওইদিন রাত প্রায় ১২টার দিকে নবজাতক সন্তানকে কূলে নিয়ে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে পা রাখলেন আমিনা বেগম।
খবর৭১/এস: