খবর৭১ঃবিশ্বে প্রায় ৮০ মিলিয়ন লোক অন্ধত্ব নিয়ে জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে গ্লুকোমাজনিত কারণে অন্ধ লোকের সংখ্যা প্রায় ৮ মিলিয়ন।
এর এক বিরাট অংশ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। বাংলাদেশে মোট জনগোষ্ঠীর ২ দশমিক ৮ ভাগ গ্লুকোমায় আক্রান্ত। এ ছাড়া এ রোগের ঝুঁকিতে আছে জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশ মানুষ।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও অন্ধত্বের দ্বিতীয় প্রধান কারণ গ্লুকোমা। শুধু অজ্ঞতার কারণে বিপুল জনগোষ্ঠী অন্ধত্বের শিকার হন। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ নির্ণয় করতে পারলে অপ্রত্যাশিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোখের অভ্যন্তরীণ উচ্চচাপ এর জন্য দায়ী। চোখের উচ্চ প্রেসারকে অকুলার হাইপার টেনশন বলে।
এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চোখের চাপ ১১-২১ মি.মি. মার্কারীর চেয়ে বেশি হলেই অকুলার-হাইপার টেনশন বলে। যদিও অপটিক স্নায়ু বা দৃষ্টি পরিধির (ভিজ্যুয়াল ফিল্ড) কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে।
তবে যখনই অপটিক স্নায়ু বা ভিজ্যুয়াল ফিল্ডের ক্ষতি হয় এবং চোখের উচ্চ প্রেসার থাকে তাকে গ্লুকোমা বলে। এর জন্য চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ক্রমান্বয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। একপর্যায়ে রোগী অন্ধত্ব বরণ করতে বাধ্য হয়।
এ রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের গ্লুকোমা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির যুগান্তরকে বলেন, এ রোগে প্রচলিত তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে।
ওষুধের মাধ্যমে, আধুনিক লেজার পদ্ধতির মাধ্যমে এবং শৈল্যচিকিৎসা বা সার্জারির মাধ্যমে। তিনি বলেন, গ্লুকোমা রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব কিন্তু নিরাময় সম্ভব নয়। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো এ রোগের চিকিৎসা সারাজীবন চালিয়ে যেতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করা এবং চোখ পরীক্ষা করা।
গ্লুকোমার ভয়াবহতা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রতি বছর ১০ থেকে ১৬ মার্চ বিশ্বব্যাপী গ্লুকোমা সপ্তাহ পালিত হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে আগামী ১৪ মার্চ জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। এ ছাড়া ওই দিন হাসপাতালে বিনামূল্যে গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করা হবে।
খবর৭১/ইঃ