বিশ্বকাপ: হেড টু হেড বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড

0
318

খবর৭১ঃ দীর্ঘ ২০ বিছর পর পঞ্চম বারের মত আবারও বিশ্বকাপ আয়োজন করছে ইংল্যান্ড। দেশটিতে আগামী ৩০ মে পর্দা উঠবে আইসিসি বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের। উদ্বোধনী দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামবে ইংলিশরা। আর স্বাগতিকদের তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ দল।

আগামী ৮ জুন বিশ্বকাপের ১২তম ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। কার্ডিফে অনুষ্ঠিত দিনের একমাত্র ম্যাচটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩ টায়। উভয় দলেরই ম্যাচটি তৃতীয় ম্যাচ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে ইংলিশরা।

কারণ এর আগে তিন বিশ্বকাপ মঞ্চে মুখোমুখি হয়েছিল দল দুইটি। এতে দুই ম্যাচেই লজ্জার হার নিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় ইংলিশদের। তবে প্রথমবার মুখোমুখি হওয়া ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারায় তারা।

আসন্ন বিশকাপের আগে দুই দল এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২০ বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে বিশ্বকাপের তিনটি আসরে ছিলো তিন ম্যাচ। তবে জয়ের সংখ্যায় বাংলাদেশ থেকে যোজন যোজন এগিয়া ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের ১৬ জয়ের বিপরিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ৪টি ম্যাচে।

দুই দল সর্বপ্রথম ব্যাট-বল যুদ্ধে মুখোমুখি হয় ২০০০ সালের ৫ অক্টোবর। সিসি নকআউট পর্বের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে। কেনিয়ার নাইরোবির জিমখানা ক্লাব গ্রাউন্ডের সে ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জাভেদ ওমরের ৬৩ ও অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় ৪৬ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা। জবাবে ৪৩.৫ ওভারে মাত্র ২ উইকেটের বিনিময়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

এদিকে প্রায় দুই বছর আগে সবশেষ ওডিআইতে মুখোমুখি হয় দুই দল। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বের ‌ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারায় ইংল্যান্ড। ২০১৭ সালের ১ জুন লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিকদের সামনে রানের পাহাড় দাঁড় করায় তামিম মুশফিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে পাহাড় টপকে জয় ছিনিয়ে নেয় জো রুট ও ইয়ন মরগান।

তামিম ১৪২ বলে ১২ চার আর ৩ ছক্কায় খেলেন ১২৮ রানের ইনিংস। ৭২ বলে ৮ চারে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে টাইগারদের রানের সংখ্যাটা ৩০৫ পৌঁছে দেন মুশফিক। জবাবে জো রুটের ১৩৩ রানের ঝড় ইনিংসে ৮ উইকেটের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশের। অ্যালেক্স হেলস ৮৬ বলে ৯৫ ও ইয়ন মরগান ৬১ বলে ৭৫ রান করেন।

আসন্ন বিশ্বকাপের আগেও তিন বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। তবে বিশ্বকাপের হিসেবে ইংল্যান্ড থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ দল। তিনবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে দুইবারই জয় পায় বাংলাদেশ। আর টাইগারদের কাছে হেরেই বিমান ধরতে হয় ইংলিশদের।

২০০৭ বিশ্বকাপ মঞ্চে সুপার এইট পর্বে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় দুর্দান্ত খেলে আসা বাংলাদেশ। ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালের ম্যাচটিতে ৪ উইকেটের জয় পায় ইংলিশরা। প্রথমে ব্যাট করে ৩৭.২ ওভারে সবকয়টি উইকেটের বিনিময়ে ১৪৩ রান করে টাইগাররা। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ইংলিশদের জয়টি সহজ হয়নি। মুখের ঘাম নাকের ঘাম ঝরিয়ে ৪৪.৫ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময় কষ্টে অর্জিত জয়টি তুলে নেয় ইংল্যান্ড।

২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে আতিথেয়তা দেয় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গ্রুপ ‘বি’র ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। গুরুত্বপূর্ণ সে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রানের বেশি করতে পারেনি ইংল্যান্ড। সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে স্বাগতিকদেরও কম ব্যাগ পোহাতে হয়নি। ৬ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন ইমরুল কায়েস।

এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ফের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচেও ইংল্যান্ডকে বিমানের টিকিট ধরিয়ে দেয় টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ইংলিশদের ১৫ রানে হারায় মাশরাফি বাহিনী।

বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথম বাংলাদেশি সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১০৩ ও মুশফিকুর রহিমের ৮৯ রানের উপর ভর করে ৭ উইকেটে ২৭৫ রানের দেয়াল দাঁড় কারায় বাংলাদেশ। জবাবে ৪৮.৩ ওভারেই ইংল্যান্ডকে প্যাকেট করেদেয় রুবেল-তাসকিনরা। ৯.৩ ওভারে ৫৩ রান খরচে ৪ উইকেট শিকার করেন রুবেল। আর মাশরাফি-তাসকিন নেন ২টি করে উইকেট।

দুই দলের বিশ্বকাপ সমিকরণে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু ঘরের মাঠে ভয়ঙ্কর ইংলিশরাও। তবে বাংলাদেশ নিজেদের দিনে বিশ্ব ক্রিকেটের যেকোনো পরাশক্তিকে পরাজিত করার ক্ষমতা রাখে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here