বিশ্বকাপে যারা দুই দেশের হয়ে খেলেছেন

0
376

খবর ৭১ঃ ক্রিকেট বিশ্বে এমন কিছু ঘটনা আছে যা ‘রেয়ার’ বা কদাচিত হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কেননা এটা সচরাচর ঘটেনা। যা ক্রিকেট ভক্তদের বিস্মিত করে। ক্রিকেটে সব সময়ই বিস্ময় থাকে, যা খেলাটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। ক্রিকেটে কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন। এ তালিকায় চারজন খেলোয়াড় আছেন যারা ভিন্ন দুই দেশের হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলেছেন।

#৪ ইয়োইন মরগান (আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড)

সত্যিকারার্থেই একটা বিস্ময়ের ঘটনা যে আয়ারল্যান্ডের একজন ক্রিকেটার এই প্রথমবারের মত বিশকাপে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব করতে যাচ্ছেন। ইংলিশ ওয়ানডে দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। হতাশাজনকভাবে ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার পর তার অধীনেই দলটির এতটাই উন্নতি হয়েছে যে, এবারের আসরে তারা ফেবারিট।

মরগান কেবলমাত্র একজন বিচক্ষণ অধিনায়কই নন, একজন ডায়নামিক ব্যাটসম্যানও বটে। আয়ারল্যান্ডে জন্ম গ্রহণ করা এ খেলোয়াড় দায়িত্বকালে ব্যাট হাতে ভাল রান পাচ্ছেন এবং ইংল্যান্ড দলের মিডল অর্ডারে একটি শক্ত স্তম্ভ।

মরগান তার প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন আয়ারলান্ডের হয়ে ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসরে। চার বছর পরের আসরেও খেলেছেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। তবে এবার খেলছেন ইংল্যান্ডের হয়ে, অধিনায়ক হিসেবে।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৫ আসরে ইংলিশ দলের নেতৃত্ব দেন মরগান।

#৩ এড জয়সে (ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড)

এ তালিকায় আরেক আইরিশ এড জয়সে। যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার পদচারণা খুব বেশি নয়। বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যান আয়ারল্যান্ডের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ইংল্যান্ডের নাগরিকত্ব গ্রহণের আগে বেশ কিছু দিন জন্মের দেশের হয়ে খেলেছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনি ইংলিশ দলের সদস্য ছিলেন। পুনরায় আয়ারল্যান্ডে ফেরার আগে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন। এখন তিনি নিজের জন্ম স্থান আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১১ বিশ্বকাপে জয়সে আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং বিশ্বকাপে দুই দেশের প্রতিনিধিত্ব করার তালিকায় নাম লেখান।

দুই দেশের হয়ে ৭৮ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৫টি হাফ সেঞ্চুরি এবং ৬টি সেঞ্চুরিসহ তিনি ২৬২২ রান করেছেন। তবে তার ক্যারিয়ারের স্মরণীয় মুহূর্ত হচ্ছে দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা।

#২ এন্ডারসন কামিন্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও কানাডা)

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করা কামিন্স ছিলেন একজন বোলিং অলরাউন্ডার। ১৯৯০ দশকের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। এমনকি ১৯৯২ বিশ্বকাপে তিনি ক্যারিবীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে দুই দেশের হয়ে দু’টি বিশ্বকাপ খেলেছেন কামিন্স।

খুব তাড়াতাড়ি অবসর নেয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কামিন্সের খেলোয়াড়ী জীবন খুব লম্বা হয়নি। ক্যারিবিয় দল থেকে অবসর নেয়ার পরই তিনি কানায় পাড়ি জমান এবং পুনরায় খেলা শুরু করেন। ক্যারিবিয় দ্বীপ পুঞ্জে অনুষ্ঠিত ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনি কানাডা দলে অন্তর্ভূক্ত অনেককেই বিস্মিত করেন।

৪০ বছর বয়সী একজন অলরাউন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করা কামিন্স ২০০৭ বিশ্বকাপে কানাডার জার্সি গায়ে চাপান। বারবাডোজে ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেকেই কামিন্সকে ভবিষ্যত তারকা হিসেবে বিবেচনা করত। তবে ক্যারিবীয়দের আশা-আকাংখা পরিণত করতে পারেননি তিনি।

তবে বিশ্বকাপে দুই দেশের প্রতিনিধিত্ব করে কদাচিত রেকর্ডের মালিক তিনি।

#১ কেপলার ওয়েসেলস (অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা)

বিশ্ব ক্রিকেটে দু’টি বড় দেশ অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তারা দু’টি পরাশক্তি তাতে কোন সন্দেহ নেই। আসন্ন ২০১৯ বিশ্বকাপেও তারা দু’টি ফেবারিট দল।

কিন্তু একজন খেলোয়াড় ছিলেন যিনি শক্তিশালী দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন। তিনি হলেন কেপলার ওয়েসেলস।

মিডল অর্ডারের একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করা দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভুত কেপলার দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন।

ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি ১৯৮৩ বিশ্বকাপে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। ১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দল থেকে অবসর নেয়ার আগে কেপলার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্টও খেলেছেন।

১৯৯১ সালে পুনরায় কেপলারের দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে ফেরা দৃশ্যমান হয়। জন্মগ্রহণকারী নিজ দেশের হয়ে খেলতে ফিরেন তিনি। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা দলের নেতৃত্ব দেন এবং দলকে সেমফিাইনালে উন্নীত করেন। অল্পের জন্য ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় প্রোটিয়ারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here