বিএনপির দুর্বলতা নয়, এটা দেশপ্রেম: ফখরুল

0
262

খবর৭১: কোনো ধরনের দুর্বলতা নয়, দেশপ্রেম থেকেই বিএনপি নমনীয় এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ারও সমালোচনা করেছেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে অনুমতি দেয়নি। এর প্রতিবাদে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা ফখরুল।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির সবগুলো কর্মসূচিই ছিল শান্তিপূর্ণ। এর মধ্যেও কোথাও কোথাও তারা পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে। এর প্রতিবাদের কর্মসূচিও এসেছে নমনীয়।

আর বিএনপির এমন কর্মসূচিকে কটাক্ষ করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তাদের দাবি, বিএনপি কিছু করার ক্ষমতা হারিয়ে এখন শান্তিপূর্ণ শব্দের ব্যবহার করছে।

মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন কর্মসূচি দেয়ায় আপনারা হয়তো ভাবছেন এটা দুর্বলতা। কিন্তু দুর্বলতা নয়, এটা দেশপ্রেম। আমরা চাই সরকার শান্তিপূর্ণভাবে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে।’

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘এটা নির্বাচনের বছর। আপনারা সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের কথা বলছেন। সবাইকে নির্বাচনে আনতে হলে সভা সমাবেশ করার সুযোগ আপনাদের করে দিতে হবে।’

‘কেন সমাবেশের অনুমতি মিলবে না?’

সমাবেশ কোনো বেআইনি কর্মসূচি নয় মন্তব্য করে কেন তারা এই অনুমতি পাবেন না সে কথাও জানতে চান ফখরুল।

‘আমরা সভা সমাবেশ করতে চাই। সরকারি দলের লোকজন বলে বেআইনি কর্মসূচি হলে তো অনুমতি পাবে না। আপনারা পুরো রাস্তা বন্ধ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আশপাশের সব রাস্তা দখল করে সমাবেশ করবেন আর আমরা অনুমতি পাব না?’

সরকার বিরোধী দলগুলোর কথা বলার অধিকার সংকুচিত করছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা (সরকার) নিজেরাই থাকবে আর কেউ থাকবে না। সারাদেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চায়।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘হয়তো ভাবেন আমরা হয়তো প্রতিদিন একই কথা বলি। আমরা সবাইকে জাগ্রত করতে চাই। কিন্তু কেউ রেহাই পাচ্ছে না। আজ হয়তো আমাদের বলা হচ্ছে। কাল আপনাদের বলা হবে।’

‘যে কারণে’ সমাবেশের অনুমতি মেলেনি

পুলিশ শেষ সময়ে হলেও সমাবেশের অনুমতি দেবে বলে ভেবেছিলেন ফখরুল। বলেন, ‘আমরা সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। লিফলেট বিরতণ করেছিলাম। নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার মানুষকে এত ভয় পায়। গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যে কারণে তারা অনুমতি দেয়নি।’

পুলিশ কী বলে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি, সেটিও জানান ফখরুল। বলেন, ‘কাল রাতে নিরাপত্তাজনিত কারণে অনুমতি দিয়ে হয়নি বলে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন।’

‘আমাদের নেতারা যখন ডিএমপিতে গেলেন তথন বলা হলো গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা হবে। তাহলে কি দেশ গোয়েন্দারা চালাচ্ছে? একটি দলের সভা সমাবেশ করতে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করতে হয়।’

ফেব্রুয়ারি মাসেও বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পায়নি। ফখরুল বলেন, ‘বই মেলার কথা বলে তখন বলা হলো মার্চে করা যাবে। কিন্তু মার্চ মাসেও করতে দেয়া হলো না।’

‘আতঙ্ক, আশঙ্কার সঙ্গে লক্ষ্য করছি অবৈধ সরকার তারা ক্রমান্বয়ে গণতান্ত্রিক চর্চার পথ একে একে বন্ধ করে দিচ্ছে। দেখুন প্রেসক্লাবের সামনে অনুমতি দেয়ার পরও তারা কি বর্বরভাবে, মধ্যযুগীয় কায়দায় কীভাবে আমাদের সামনে থেকে নিয়ে গেছে। সারা দেশে যারা অ্যাকটিভ তাদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করছে।’

নতুন করে সমাবেশের ডাক

সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবার সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। গণতন্ত্রের প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধা থাকলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই সমাবেশ করার ব্যবস্থা করবেন বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।

ঢাকার মতো ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম, ৩১ তারিখ রাজশাহী এবং ২৪ বরিশালে জনসভা করতে সরকার সুযোগ দেবে বলেও আশার কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, ‘এখনও ধৈর্য ধরে আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি। আমরা সংঘাত চাই না। আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়ার নিন্দা জানাচ্ছি। তবে প্রতিবাদ কর্মসূচি না দিয়ে ভিন্নধর্মী কর্মসূচি দিচ্ছি। যাতে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়।’

জামিনে খালেদার মুক্তি দাবি

খালেদা জিয়াকে জামিন দিতে বিলম্বেরও সমালোচনা করেন ফখরুল। বলেন, ‘একমাসের বেশি হয়ে গেল তিনি কারাগারে। এখনো জামিন হয়নি। জামিনের জন্য নথি তলবকেও আইনজীবীরা সমালোচনা করছেন। আমরা চাই তিনি তার আইনি অধিকার পাবেন। প্রত্যাশা তিনি আজ জামিন পাবেন। আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।’
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here