বিএনপিকে নির্বাচনকালীন সরকারে রাখার সুযোগ নেই : কাদের

0
194

খবর ৭১: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যখন সুযোগ ছিল তখন বিএনপি আসেনি। গত নির্বাচনে তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদটি পর্যন্ত আমরা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এখন তো তাদের সংসদে প্রতিনিধিত্বই নেই। সেখানে তাদের নেওয়ার সুযোগই নেই।

ঈদ উপলক্ষ্যে শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শনকালে আগামী নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির কোনো অংশগ্রহণ থাকবে কি-না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি একথা বলেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান প্রমুখ।

নির্বাচনকালীন সরকারে টেকনোক্রাট পদে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা আছে কি-না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বুদ্ধিজীবী আছেন, পেশাজীবী আছেন। আরো অনেকেই আছেন। সেখানে একটি দল থেকে কেন নিতে হবে? আর সেই চিন্তা সরকারের নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের কোনো পদ্ধতি নেই। পদ্ধতিটা আমাদের সংবিধানে আছে।

সংবিধান নির্ধারণ করে দিয়েছে কীভাবে নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার জন্য অর্পিত দায়িত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করতে নির্বাচন কমিশন যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য ৯০ শতাংশ প্রস্তুতি শেষ করেছেন বলে ঘোষণা করেছেন। আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা কীভাবে হবে তাও কিন্তু নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সরকার কিছুই করবে না।

মন্ত্রী বলেন, দেশে এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু এক-এগারোর ন্যায় আবারো দেশকে ভয়ঙ্কর ও অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপি ও তার দোসররা উঠে পড়ে লেগেছে। তবে বাধা উপেক্ষা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের স্বনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় জিয়া পরিবারের ভুল দেখতে পান’। ফখরুল বলেন, `তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ১৯৭৫-এর বিয়োগান্তক ঘটনার সঙ্গে কিভাবে জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদাকে যুক্ত করেন? আপনি এমন হাস্যকর কথা বলতে পারেন না। দয়া করে এ ধরনের কথা বন্ধ করুন।

এক-এগারোর মতো সামরিক বাহিনীর সহায়তায় একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব একটি মারাত্মক কথা বলেছেন। এক-এগারোর পদধ্বনি তিনি শুনতে পাচ্ছেন। এরপরও আপনি (ওবায়দুল কাদের) সরকারে আছেন! এখনো পদত্যাগ করছেন না! সরকার আপনাদের আর আপনি এক-এগারোর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?’

ফখরুল বলেন, একটা কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এক-এগারোর বেনিফিশিয়ারি কিন্তু এই আওয়ামী লীগ।’ ১/১১ সরকার তো আপনাদের জন্যই লাভবান ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে কেন আবার শঙ্কিত হচ্ছেন? আসলে আপনারা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

বিএনপি নেতা এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, ‘এই ওবায়দুল কাদেরের সরকার এত বেনিফিশিয়ারি যে সরকারে যাওয়ার আগেই, আপনাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) বিদেশে যাওয়ার আগেই বলেছিলেন যে আমরা এই সরকারের মানে, এই ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন অবৈধ সরকারের সব কর্মকাণ্ড বৈধ করে দেবো। দিয়েছেনও, পার্লামেন্টে আইন পাস করেছেন।’

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এক সংহতি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার একের এক ভিন্ন মতকে সরিয়ে দিচ্ছে। তারা বলছে, আমরা নাকি উসকানি দিচ্ছি। আমরা উসকানি দেব কেন? আমরা আজকেও বলছি, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই। শুধু তাই নয়, আমরা আহ্বান জানাচ্ছি নিরাপদ বাংলাদেশের দাবিতে আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। আসুন, জনগণের জন্য একটি সুন্দর রাষ্ট্র নির্মাণ করি।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগিরক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএফইউজের সভাপতি সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস শহীদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here