বাড়ি ফিরলেন আহেদ তামিমি

0
373

খবর৭১:এক ইসরাইলে সেনাকে লাথি ও চড় মারার দায়ে আট মাস কারাভোগের পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন ফিলিস্তিনি তরুণী আহেদ তামিমি। তাকে আটক করার পর তার পরিবার তার মুক্তির বিষয় নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিল।

তার মুক্তির মুহূর্তটির জন্যই অপেক্ষায় ছিল তার পরিবার। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য জেলের বাইরে জনতার ভিড় জমে যায়। পরিচিতজনরা তাকে সাদরে বরণ করে নেন, জড়িয়ে ধরেন এবং শুভেচ্ছা জানান। সে সময় অনেকেই ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে শ্লোগান দিচ্ছিলেন। সমবেত জনতার উদ্দেশে আহেদ তামিমিকে ছোট একটি বক্তৃতাও দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ যারা এখানে সমবেত হয়েছেন তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমি আশা করি সবাই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন। সেখানে আমি আমার বার্তা তুলে ধরব।

তিনি বলেন, কারাগারের অন্য যেসব নারী বন্দী ছিলেন তাদের বার্তাও তুলে ধরব আমি। তারা চেয়েছেন যেন আমি তাদের হয়ে কথা বলি।

ইসরায়েলি সেনাকে চড় ও লাথি মারার ঘটনার পরপরই গ্রেফতার হয়েছিলেন তামিমি ও তার মা। কিন্তু এর ভিডিও ছড়িয়ে যায় সারা পৃথিবীতে। এরপরই তার বিচার এবং শাস্তি নিয়ে বিভিন্ন দেশে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

আট মাসের কারাভোগের সময় এই ১৭ বছরের তরুণী পরিণত হন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন প্রতীকে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে সেই ইসরায়েলি সেনাকে চড় মারার ঘটনা আহেদ তামিমিকে সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত করে তোলে। তার সাথে ছিলেন তার মা নারিম্যান তামিমি।

তাদের বাড়ির বাইরেই ঘটেছিল ওই ঘটনাটি। তার ঘন্টাখানেক আগে সৈন্যরা আহেদ আমিমির ১৫ বছর বয়সী চাচাত ভাইয়ের মাথায় রাবার বুলেট দিয়ে গুলি করে।

tamimi

ওই ঘটনার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের চোখে রীতিমত একজন বীরে পরিণত হন আহেদ তামিমি। তবে ইসরায়েলিরা তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনে।

আহেদ তামিমির বাবা বাসেম তামিমি নিজেও একজন ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী। তার মতে, তাদের প্রতিরোধ করাটাই স্বাভাবিক। প্রতিরোধ না করাটাই বরং অস্বাভাবিক।

তিনি বলেন, আপনি যদি দখলদারির বিরুদ্ধে চুপ করে থাকেন, তাহলে আপনার মনে অপরাধবোধ তৈরি হতে বাধ্য। আমরা আমাদের মর্যাদা আর অধিকারের জন্য যুদ্ধ করছি। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি কি এখন চাইবেন যে তার মেয়ে যেন ঘরের মধ্যে নিরাপদে থাকে।

জবাবে তিনি বলেন , এখানে ঘরও নিরাপদ নয়। ঘর কি নিরাপদ? আমার তো মনে হয় না। ফিলিস্তিনে নিরাপদ জায়গা কোথায়? আমি জানি না।

তামিমিরা যেখানে থাকেন সেই গ্রামের নাম নাবি সালেহ। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত চলছে।

এখানে ফিলিস্তিনিদের জমির ওপর একটি ইসরায়েলি বসতি তৈরি করা হয়েছে এবং এখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা প্রতি সপ্তাহেই বিক্ষোভের আয়োজন করেন।

আহেদ তামিমি এবং তার মা জেলে থাকার সময় বাসেম তামিমি তার বাড়িটির কিছু অংশ পুননির্মাণ করেছেন তাদের মুক্তির প্রস্তুতি হিসেবে। আহেদ তামিমি ফিরে এসেছেন নতুন বাড়িতে এক নতুন বাস্তবতায় । এখন তিনি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের এক নতুন মুখ, নতুন প্রতীক।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here