বাড়ির ছাদেও থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
240

খবর ৭১: নির্বাচনের কারণে এবার উন্মুক্ত স্থানের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ছাদেও থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

থার্টিফাস্ট ও বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে রোববার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে মন্ত্রী এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানান।

একইসঙ্গে থার্টিফাস্ট নাইটে কোনো আতশবাজি, পটকা ফোটানো, বেলুন, ফানুস ওড়ানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রেক্ষাপটে এবার নিয়ন্ত্রিতভাবেই ইংরেজি বছরের শেষ দিনটি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা এলো সরকারের পক্ষ থেকে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে তুলে ধরেছি, এবারের প্রেক্ষাপটটা অন্যরকম। আমাদের জাতীয় নির্বাচন ৩০ তারিখে হতে যাচ্ছে। সেজন্য বিশেষভাবে নিরাপত্তার কথা চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

‘থার্টিফাস্ট নাইটের জন্য আমরা কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। থার্টিফাস্ট নাইট আমরা প্রথমত নিরুৎসাহিত করবো ওইদিন করার জন্য। কারণ আপনারা জানেন, ৩০ তারিখ আমাদের সাধারণ নির্বাচন, সেটা লক্ষ্য রেখেই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সবাই সেদিন ইলেকশনের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। কাজেই আমরা নিরুৎসাহিত করছি, কোনো ধরনের খোলা জায়গায় যেন থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান না হয়। বিশেষ করে কোনো উন্মুক্ত স্থানে এসব অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং বাসার ছাদেও করা যাবে না এসব অনুষ্ঠান।’

ফাইভ স্টার ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ছাড়া সব ধরনের বার বন্ধ থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

‘৩১ ডিসেম্বর বিকেল থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লাবে কোনো বার খোলা থাকবে না। থার্টিফাস্ট নাইটে কোনো বৈধ অস্ত্র বহন করা যাবে না। ওড়ানো যাবে না কোনো বেলুন, ফানুস, ফোটানো যাবে না আতশবাজি, পটকা।’

ডিজে পার্টির ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফাস্ট নাইটে কোনো হোটেল-গ্যাদারিং সৃষ্টি করে ডিজে পার্টি করা যাবে না। হোটেলগুলোতে এবং বিভিন্ন জায়গায় ডিজে পার্টি করে একটি বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়; যেহেতু ইলেকশন, সেহেতু আমরা বলছি কোনো হোটেলে ডিজে পার্টি করা যাবে না এবং কোনো গ্যাদারিং সৃষ্টি করা যাবে না। থার্টিফাস্ট নাইটে হোটেলগুলোতে বৈধ পার্কিংয়ের বাইরে কোনো জায়গায় পার্ক করতে পারবে না। সেটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো। দেশের পর্যটন এলাকার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও থাকবে।

ইংরেজি বছরের শেষ দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ন্ত্রিত থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৩১ ডিসেম্বর দিন ও রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না, যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হবে।

খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে চার্চগুলোতে নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব বাহুবন্ধনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায় যেখানে বড় দিনের অনুষ্ঠান হবে সেখানে তাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেবেন। তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সহযোগিতা করবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো চার্চ রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে ৭৫টি। এরমধ্যে বড় চারটি তেজগাঁও, রমনা, মিরপুর ও বনানীতে। প্রতিটি চার্চের দৃশ্যমান নিরাপত্তার পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বলয় নিয়ে আসা হবে। প্রতি চার্চে সিসি টিভি লাগানো হবে। বড়দিন উপলক্ষে সারাদেশেই সব চার্চ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা থাকবে।

থার্টিফাস্ট নাইটের মতো বড়দিনেও কোনো ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফোটানো যাবে না বলে জানান মন্ত্রী।

আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের পুরোপুরি এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে আমাদের করণীয় কিছু নেই। ইলেকশন কমিশন যেভাবে মনে করে সেই ব্যবস্থা করবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সহযোগিতা করার জন্য তৈরি আছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ৬০ লাখ লোক আনসারের ট্রেনিংপ্রাপ্ত আছে। কিন্তু নির্বাচনের কারণে সব প্রয়োজন হবে না। আমাদের ৫ লাখ ফোর্স তৈরি রয়েছে এবং পর্যয়ক্রমে তারা ট্রেনিং দিয়ে যা যা প্রয়োজন তৈরি করছে। পাশাপাশি কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ- সবাই তৈরি আছে।

সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here