খবর৭১:লাতিন আমেরিকার খনিজসম্পদে ভরপুর ভেনেজুয়েলা অর্থনৈতিক সংকটে পড়ার দুই বছর পেরিয়ে গেছে। ওই সময়েই পশ্চিমা অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, সংকটের কারণে ভেঙে পড়বে দেশটির সরকার। কিন্তু বিশ্লেষকদের আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত করে ঠিকে আছে দেশটি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া এবং দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখেও ভেনেজুয়েলার ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ঠিকে যাওয়া অবাক করার মতো ঘটনা। সম্প্রতি বিরোধী নেতা হুয়ান গুইদো নিজেকে স্বঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট দাবি করার পর সংকট চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ৪০টিরও বেশি দেশ গুইদোকে সমর্থন দেওয়ার ফলে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির ওপর আন্তর্জাতিক নজরদারি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তুলে আনা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটির মুদ্রা কার্যত অচল হয়ে পড়লেও কীভাবে মাদুরো তা দিয়েই সরকার ও শাসন ব্যবস্থা চালু রেখেছেন। বিশ্লেষকরা মাদুরোর এই পরিকল্পনাকে বাতিল নোটে সোনায় রূপান্তর করা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাজ্যকে চাপ দিচ্ছে ভেনেজুয়েলার ১.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনার মজুদ আটকে রাখার জন্য। মাদুরোর সরকার এই সোনা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে জমা রেখেছে। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার সোনা কেনার ক্ষেত্রে আবুধাবিভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে বিদেশি ক্রেতাদেরও না কেনার জন্য সতর্ক করেছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা বিদেশিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন মাদুরো।
মাদুরোর সোনার কর্মসূচির কথা গোপন কিছু নয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ভেনেজুয়েলার এই সোনার ব্যবসার পুরো চিত্র তুলে ধরেছে তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। এই প্রতিবেদন তৈরিতে কথা বলা হয়েছে ৩০ জনের বেশি লোকের সঙ্গে, যারা এই বিষয়ে অবগত বা সংশ্লিষ্ট। এদের মধ্যে রয়েছেন, খনি শ্রমিক, মধ্যস্বত্ত্বভোগী, ব্যবসায়ী, গবেষক, কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তা। প্রায় সবাই ভেনেজুয়েলা বা মার্কিন সরকারের রোষানলে পড়ার আশঙ্কায় বা এই বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার না থাকার কারণে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন।
খবর৭১/জি