বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ৮০০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হচ্ছে ১শ মেঘাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন মধুমতি পাওয়ার প্লান্ট। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই বছরের শেষের দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বাকি কাজ শেষ হবে এমনটাই দাবী কর্তৃপক্ষের। তবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে গেলে দেশের বিদ্যুতের চাহিদা অনেকাংশে পুরণ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার মধুমতি নদীর তীরে গাড়ফা ও গ্রীসনগর মৌজায় ১৬ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে মধুমতি পাওয়ার প্লান্ট। এই বছরের ২৮ জানুয়ারী বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই জমি বুঝে দেওয়ার পর শুরু হয় এই পাওয়ার প্লান্টের নির্মান কাজ। নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী লিমিটেড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড ইক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) কারিগরি সহায়তায় ইতিমধ্যে এর ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মান, ৬টি ইঞ্জিন ও জেনারেটর স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। চলছে কন্টোল রুম, আবাসিক ভবন ও সংযোগ স্থাপনের কাজ। সাত শতাধিক দেশী-বিদেশী দক্ষ শ্রমিক ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সম্মন্বয়ে দ্রুতগতিতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মান কাজ এগিয়ে চলছে। এবছরের ৩১ ডিসেম্বর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে যাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার দুরে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনের কাছে অবস্থিত বিদ্যুতের সাব-স্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীডে সংযুক্ত হবে এই কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ। নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ- ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লাম ইন্টারপ্রাইজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জোবায়ের রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, জানুয়ারী মাসে বাঁধ নির্মানের মধ্যদিয়ে প্রথম তারা কাজ শুরু করেন। পরে বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মান নির্মান, নদীর পাশে পাইলিং এর কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ইন্টারনাল রোড, এপ্রোচ রোড, কানেকটিং রোড, আবাসিক ভবন, আনসার ব্যারাকসহ ৫টি ভবনের নির্মান কাজ চলছে। তদারকিকারী প্রতিষ্ঠান জিটেনকোর এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোহব্বত মোল্লা জানান, কাজের ৬০ ভাগ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ওয়েল ট্যাঙ্কারের কিছু মালামাল পথে আছে, সেগুলো এসে গেলেই আগামী মাসের মধ্যেই ওয়েল ট্যাঙ্কারের কাজ শেষ হবে। জেনারেটরের সাথে ইঞ্জিন ফিটিং চলছে। নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী লিমিটেডের উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ আনিছুর রহমান জানান, ছয়টি জেনারেটর এবং ছয়টি ইঞ্জিন ইতিমধ্যে ফাটফর্মের উপর বসানো হয়েছে। যথা সময়েই এটি উৎপাদনে যাবে। চায়না ন্যাশনাল ম্যাশিনারি ইমপোর্ট এন্ড ইক্সপোর্ট কর্পোরেশনের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মিঃ টিনগো বলেন, সকল ফাইলিং এর কাজ শেষের পথে। যথা সময়ে কাজ হস্তান্তর করা হবে।
মধুমতি ১০০ মেঘাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহম্মেদ, পাওয়ার প্লান্টের কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর এটি উৎপাদনে যাবে। সাড়ে ১৪ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন টেনে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনের সামনে সাব স্টেশনে এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যোগ হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে গেলে এলাকায় নতুন নতুন শিল্প কারকানা গড়ে উঠবে। যার ফলে বেকার সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসির।
খবর৭১/এসঃ