খবর। ৭১: ২২১ রান করে এত সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার কথা লঙ্কানরাও মাথায় আনেনি হয়তো। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগটাই এনে দিলো শ্রীলঙ্কার সামনে। উইকেট বিলানোর দিনে মাশরাফিদের ৭৯ রানে হারিয়ে তিন জাতি সিরিজের ট্রফি ঘরে তুললো হাথুরুসিংহের লঙ্কা শিবির। বিপরীতে সিরিজে ফেবারিটের তকমা লাগিয়েও ঘরের মাঠে বছরের শুরুতেই শিরোপা হাতছাড়া হলো তামিম-সাকিবদের।
ট্রাইনেশন সিরিজের উত্তেজনাকর ফাইনালে শ্রীলঙ্কার দেয়া ২২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪১.১ ওভারে ১৪২ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে এদিন দলের পক্ষে লড়াই বলতে যেটুকু করেছেন সে এক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৯২ বলে তার ৭৬ রানের ইনিংসটিও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে পথের দিশা দিতে পারলো না।
পতনের শুরুটা অবশ্য শুরু থেকেই। চলতি সিরিজে দারুণ ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল এদিন দলীয় মাত্র ১১ রানে ব্যক্তিগত ৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠা তামিম দুষ্মন্ত চামেরার বলে আকিলা ধনাঞ্জয়ার হাতে তালুবন্দি হওয়ার পর দলীয় ৬ রানের ব্যবধানে রান আউটের শিকার হন এনামুল বিজয়ের জায়গায় দলে ডাক পাওয়া মোহাম্মদ মিঠুন (১০)।
প্রত্যাশা ছিল সাব্বিরের ওপর। মিডল অর্ডারের সব সমালোচনা ঘুচানোর সুযোগও ছিল তার সামনে। সাকিবের ইনজুরিতে ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তিনিও দলকে বিপদে ফেলে মাত্র ২ রান করে চামেরার দ্বিতীয় শিকার হন।
২২ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তো তখনই অনেকটাই দিকভ্রান্ত। তার উপর আবার আঙুলের চোটে সাকিবের ব্যাট না করতে পারার দুঃসংবাদ। তবে দুই অভিজ্ঞ ক্যাম্পেইনার মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শক্ত হাতেই চাপ সামলে দলকে গভীর খাদ থেকে একটু একটু করে টেনে তুলছিলেন। ৫৮ রানের একটা দারুণ পার্টনারশিপও জমে উঠেছিল। কিন্তু আবারও ছন্দপতন। আকিলা ধনাঞ্জয়ার বলে রিভার স্যুইপ করতে গিয়ে থারাঙ্গার তালুবন্দি হন ৪০ বলে ২২ রান করা মুশি।
এর পর বলা যায় মাহমুদউল্লাহর একার লড়াইয়ে একশো পেরোয় বাংলাদেশ। মাঝে মিরাজ (১৪ বলে ৫ রান) ও সাইফুদ্দিন (২৯ বলে ৮ রান) চেষ্টা করেও মাহমুদউল্লাহর যোগ্য সঙ্গী হয়ে উঠতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৫ রান করে অধিনায়ক মাশরাফি সাজঘরে ফেরার পর উপর্যুপরি রুবেলেরও উইকেট তুলে নেয় লঙ্কান পেসার মাদুসাঙ্কা।
সবশেষ রানের বোঝা ঝেড়ে ফেলতে বড় শট খেলতে গিয়ে সেই মাদুসাঙ্কার বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উপল থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দিলে আরও একবার স্বপ্নের যবনিকা চোখে মাখে মিরপুরের গ্যালারিভর্তি টাইগারভক্তরা।
লঙ্কান বোলারদের মধ্যে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে আলো ছড়ান সিহান মাদুসাঙ্কা। তার ৩ উইকেট এছাড়াও চামেরা ও ধনাঞ্জয়া ২টি করে উইকেট দখল করেন। ম্যান অব দ্য ফাইনাল হন লঙ্কান অপেনার উপল থারাঙ্গা। ম্যান অব দ্য সিরিজ অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।
এর আগে দুপুরে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে ৯৯ বলে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন অপেনার উপল থারাঙ্গা। এছাড়া ৫৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন সাইফের শিকার হওয়া ডিকওয়ালা। অন্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল ৭৪ বলে ৪৫ রান করেন। এছাড়া ধনাঞ্জয়া ১৭, গুনারত্নে ৬, মাদুসাঙ্কা ৭, পেরেরা ২, লাকমাল ২ ও চামেরা ১* রান করেন।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন রুবেল হোসেন। পাশাপাশি মোস্তাফিজ ২টি, মাশরাফি-মিরাজ-সাইফুদ্দিন ১টি করে উইকেট দখল করেন।