‘বন্দুকযুদ্ধ’ অব্যাহত, আজও নিহত ৯

0
452

খবর ৭১: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৯ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা,ফেনী,গাইবান্ধা,লালমনিরহাট, জামালপুর,ঠাকুরগাঁও,রংপুর ও কুষ্টিয়াতে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
ফেনী: ফেনীতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত সেই মাদক ব্যবসায়ীর নাম মো. ফারুক (৩৫)।  ফারুক চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে ফেনী শহরতলীর কালিপাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি প্রাইভেট কারসহ ২২ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি ওয়ানশ্যুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি ও ৫টি খালি খোসা উদ্ধার করে র‌্যাব।
র‌্যাব-৭ এর ফেনী ক্যাম্প অধিনায়ক শাফায়াত জামিল ফাহিম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদপুল এলাকায় টহল বসায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী ফারুক কালিপাল দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ফারুকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, এসময় একটি প্রাইভেটকার, ২২ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি ওয়ানশ্যুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি ও ৫টি খালি খোসা উদ্ধার করে র‌্যাব। ফারুকের বিরুদ্ধে মাদকসহ অসংখ্য মামলা বিভিন্ন থানায় রয়েছে।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও লিটন শেখ (৪০) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত ফটিক কুমারখালী উপজলার এলেঙ্গীপাড়ার মৃত ওসমান গণির ছেলে ও লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনী পাড়ায় ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী ইটভাটা মাঠে এই পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক জানান, মাদক বাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য কর গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ফটিক ওরফে গাফফার গুলিবিদ্ধ হন।
তিনি আরও বলেন, পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফটিক ওরফে গাফফার পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি, ৭শ’ পিস ইয়াবা ও ৫শ’ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী ইটভাটা মাঠে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লার সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত সেই মাদক ব্যবসায়ীর নাম নুরুল ইসলাম ইসহাক ওরফে ইসা (৪০)।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে কুমিল্লা সদরের গোমতি নদীর পাড় সংলগ্ন সামারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল ইসলাম ইসহাক ওরফে ইসা সদরের জগন্নাথপুর ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সালাহ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মাদকের একটি চালান আসছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে নুরুল গুলিবিদ্ধ হন।
তিনি আরও বলেন, পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
রংপুর: রংপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম শাহিন মিয়া (৩০)। এসময় ঘটনাস্থল থেকে এক বস্তা ফেনসিডিল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আজ বুধবার ভোরে সদর উপজেলার হাজিরহাট এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সাইফুর রহমান সাইফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলভার ও এক বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তি তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও মাদক। ওই সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আহত হন। নিহত শাহিন মিয়াকে ভোরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাকে হাসপাতালের ডেথ হাউজে (হিমঘর) রাখা হয়।
ঠাকুরগাঁও: সদর উপজেলার ভাতারমাড়ী ফার্ম নামক স্থানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম আফতাফুল ইসলাম (৩৮)। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের পাড়ুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে। আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ দাবি করেছে, তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ১৯টি মামলা আছে, যার মধ্যে ১২টিই মাদকবিরোধী আইনে দায়ের করা। আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী ও পীরগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। এসময় বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি সাজেদুর রহমানসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন বলেও পুলিশ জানিয়েছে। আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে আফতাবুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আফতাবুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার সহযোগীদের ধরতে অভিযানে যায় পুলিশ। তাকে নিয়ে পীরগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় ভাতারমাড়ী ফার্ম সংলগ্ন বনবাড়ি এলাকায় গেলে একদল দুর্বৃত্ত পুলিশের ওপর গুলি চালায়। তারা আফতাবুলকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে আফতাবুল ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
জামালপুর: জামালপুরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বুধবার ভোরে শহরতলীার ছনকান্দা মাদ্রাসা বালুঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক ক্রয়-বিক্রয় করছে এমন খবর পেয়ে জামালপুর সদর থানা পুলিশ অভিযানে যায়। টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এসময় অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়।
বন্দুকযুদ্ধে জামালপুর থানার ওসি নাসিমুলসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজু মিয়া নামের এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য।

বুধবার ভোরে উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গোলাবারুদ এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজা জব্দ করেছে গাইবান্ধা র‌্যাব-১৩ ক্যাম্পের সদস্যরা। রাজু মিয়ার বিরুদ্ধে পলাশবাড়ী থানায় একাধিক মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে।

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুর আলম এশা (৪০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৩টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ধরলা সেতুর কাছে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২০ কেজি গাঁজা, ৫০ বোতল ফেনসিডিল, ৬টি রামদা ও কিছু গুলির খোসা উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মাদকের একটি চালান লালমনিরহাটে ঢুকছে এমন খবর পেয়ে পুলিশের টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছালে গুলি ছোড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই নুর আলম এশার মৃত্যু হয়। নিহত এশার বিরুদ্ধে থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here