ফেব্রুয়ারিকে বরণ করতে ফুলের রাজধানী গদখালি প্রস্তুত

0
1821

জাহিরুল ইসলাম মিলন।।যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ
ফেব্রুয়ারি মাসের তিন উৎসবকে সামনে রেখে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালির ফুলবাজারে বেচাকেনা জমে উঠেছে।

বসন্তবরণ, ভ‌্যালেন্টাইনস ডে আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতিবছরই ফুল বেচাকেনা বেড়ে যায় গদখালি বাজারে।

উৎপাদন ভালো হওয়ায় এ বছর বেচাকেনা ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন চাষীরা।

সূর্য ওঠার আগেই প্রতিদিন চাষী, পাইকার, মজুরের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে যশোর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে ‘ফুলের রাজ্য’ গদখালি বাজার।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এ বাজারে আসেন ফুল কিনতে।

দরদাম মিটিয়ে ব্যবসায়ীরা ট্রাক-পিকআপ কিংবা বাসের ছাদে গাঁদা, গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা আর ইউরোপের ফুল জারবেরা নিয়ে ছুটে যান গন্তব্যে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, এবার ফুলের উৎপাদন, চাহিদা ও দাম সবই বেশি। এ অঞ্চলের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরাও তাই খুশি।

তিনি জানান, অন‌্য যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার চাহিদা অনেক বেশি বলে ফুলের যোগান দিতে চাষীরা হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে অর্ধকোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হচ্ছে গদখালি বাজারে।

ফেব্রুয়ারির তিন উৎসব সামনে রেখে যে ফুল বেচাকেনা হয় তার অন্তত ৭৫ শতাংশের যোগান যশোর থেকে যায়। রহিম বলেন, এবার এ মৌসুমে ২০ কোটি টাকার ব‌্যবসা হবে বলে তারা আশা করছেন।

ঝিকরগাছার নন্দী ডুমুরিয়া গ্রামের ফুলচাষী গোলাম রসুলের মুখেও খুশির কথা জানা গেল। তিনি জানান, এবার ১০ বিঘা জমিতে গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস ফুলের পাশাপাশি জারবেরার চাষ করেছেন তিনি। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাগানে বেশি ফুল এসেছে।
ফুল বিক্রি করে এবার পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা গোলাম রসুলের।

এবার কৃষকের খামারে বিশেষ উপহার হয়ে এসেছে বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ। চাহিদা বেশি থাকায় চাষীরাও ভালো লাভ পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।

সৈয়দপাড়ার আতিয়ার রহমান গাজী জানান, গত দুদিনে প্রায় লাখ টাকার গোলাপ বিক্রি করেছেন তিনি।

আর পটুয়াপাড়ার সাহেব আলী শুধু মঙ্গলবারই বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকার লাল গোলাপ।

ঝিকরগাছার কাগমারী গ্রামের রকিবুল ইসলাম বলেন, “দুদিনে আমি দেড় লাখ টাকার জারবেরা বিক্রি করেছি।”

ঝিকরগাছার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাইদুল ইসলাম জানান, তাদের তত্ত্বাবধানে এ অঞ্চলে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে ৫০০ ফুলচাষী বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ করেছেন।
ফুলচাষীরা এবার প্রতিবিঘায় গড়ে ৭০-৮০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

গদখালিতে রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, জিপসি, ক্যালেন্ডুলা, ডালিয়া, লিলিয়াম, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুলের চাষ হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গদখালি বাজারের বিক্রেতারা এবার ফুলের দাম বেশি চাইছেন।

পিরোজপুর থেকে আসা ফুল ব্যবসায়ী তওফিক এলাহী বলেন, “৬০ হাজার টাকা নিয়ে ফুল কিনতে গদখালি এসেছি। এসে দেখি দাম খুব বেশি।”

বুধবার গদখালী বাজারে দেখা গেল, প্রতিটি জারবেরা ১২ থেকে ১৫ টাকা, প্রতিটি রজনীগন্ধা ২-৩ টাকা, গোলাপ ১০-১৫ টাকা, রং ভেদে গ্ল্যাডিওলাস ৩-১০ টাকা এবং এক হাজার গাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here