খবর৭১ঃ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের ওড়িশায় তাণ্ডব চালিয়ে দেশটির পশ্চিমবঙ্গে অতিক্রম করছে। মহাশক্তিধর এই ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফণীর প্রভাবে উপকূলের জেলাগুলোতে তীব্র ঝড়ো হাওয়া বইছে।
শুক্রবার (৩ মে) বিকেল ৫টার দিকে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বাতাস বইতে শুরু করে। সন্ধ্যার দিকে বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিও শুরু হয়।
এদিকে বাগেরহাটের থানপুরে গাছ পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও গাছপালা পড়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ উপকুলীয় জেলাগুলোর প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৩ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অধিদফতরের কার্যালয়ে সর্বশেষ ব্রিফিং করেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের মহাপরিচালক শামছুদ্দিন আহমদ।
ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশে আঘাত করবে সন্ধ্যায় ৬টার দিকে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ঊড়িষা উপকূল অতিক্রম করেছে। অতিক্রমের সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার। যা একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঊড়িষা উপকূল অতিক্রম করেছে। আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঊড়িষা উপকূল হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হতে হতে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে খুলনা উপকূল স্পর্শ করে সারা রাত ধরে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে থাকবে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘এই সময়ে ঝড়ো হাওয়া ও ঝলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সে কারণে খুলনাসহ আশেপাশের জেলাগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছি। যেহেতু এটি একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, ২০ থেকে ২২ বছর আগে এই ধরনের সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে, শস্যহানি হয়েছে। সেই অর্থে আমরা যেহেতু ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছি, সে কারণে জনসাধারণ যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের অবশ্যেই দ্রুত সাইক্লোন সেন্টারে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত।’
শামছুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এ ছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে আমরা ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়ে যেতে বলেছি। চট্টগ্রাম ও আশপাশের নোয়াখালী, চাঁদপুর অঞ্চলগুলোর জন্য একই সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে যেসব জনসাধারণ আছেন, সরকারের যে পরামর্শ আছে, সেই অনুযায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় খুলনাসহ ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালীসহ অনেক দূরে যেসব দ্বীপ আছে, সেখানে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশে এই ঘূর্ণিঝড়ের যেদিক দিয়ে প্রবেশ করবে সেদিকে গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। সারা দেশে সর্বনিম্ন গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।’