প্রায় ১১ দিন ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না

0
284

খবর৭১:বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাবিধি লঙ্ঘন করে ১১ দিন ধরে তার পরিবারের লোকজনসহ কাউকেই দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কারাবন্দি হিসেবে খালেদা জিয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার পাওয়ার কথা সেটি থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ১১ দিন ধরে তার সঙ্গে পরিবারের লোকজনও দেখা করতে পারছেন না। ৩০শে জুন সবশেষে তারা দেখা করেছেন।

আমরা তো পারছিই না। এমনকি আইনজীবী ও তার চিকিৎসকরাও দেখা করতে পারছেন না। গতকাল দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, জেলকোডের বিধানমতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের দেখা না করতে দেয়া তার এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘন।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে আটক রাখার পর তিনি কারাবিধির ৬১৭ বিধি অনুসারে ডিভিশন-১ প্রাপ্ত হন। আর ডিভিশন-১ প্রাপ্ত বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারাবিধির সপ্তদশ অধ্যায়ে (বিধি-৬৬৩-৬৮১) বর্ণিত অধিকারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুবান্ধবের সাক্ষাৎকারের বিষয়টিও বিশদভাবে বলা আছে।

তিনি বলেন, উপরোক্ত বিধানের অতিরিক্ত হিসেবে আরো বলা যায়- খালেদা জিয়া যেহেতু সাজার মামলায় জামিনে আছেন, সেহেতু তাকে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে বিবেচনা না করে বিচারাধীন মামলায় বন্দি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সে হিসেবেও কারাবিধির সপ্তবিংশ অধ্যায়ে (বিধি-৯০৯-৯১০) অনুসারে তিনি প্রথম শ্রেণির ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি। সেখানেও তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুদের সাক্ষাতের অধিকার বিধি-৬৮২তে প্রদান করা আছে।

শুধু তাই নয়, কারাবিধির ৮০(৪) বিধি অনুসারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কারাগারের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাক্ষাৎ প্রার্থীর মতামত অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্ধারিত ভিজিট বই রাখার বিধানও করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাবিধি অনুসারে এখন গণ্য হবেন না। কারণ, তিনি সাজার মামলায় জামিনে আছেন। ফলে বিচারাধীন মামলায় আসামি হিসেবে কারাবিধির ৬৮২তে প্রদত্ত অধিকার বাদেও কারা আইন ১৮৯৪-এর ধারা ৪০ এর বিধানমতে তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুদের সাক্ষাতের অধিকার রাখেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, এখানে একটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন- খালেদা জিয়ার সঙ্গে একজন নারী কর্মীকে থাকার অনুমতি দিয়ে সরকার যে বাহবা নেয়ার চেষ্টা করছে তা জাতির সঙ্গে ধোঁকাবাজি। কারণ কারাবিধি ৯৪৮ অনুসারে সরকার একজন মহিলা কর্মী দিতে বাধ্য। মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলছি বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার ফাঁদ পাতা হয়েছিল। আলাদা আদালত বানিয়ে তাকে দ্রুত সাজা দেয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও সাবেক এমপি সালাউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী বন্দির সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় জেলার সাক্ষাতের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে বড় দলের চেয়ারপারসন, একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী এবং সর্বোপরি একজন সত্তরোর্ধ্ব বয়স্ক অসুস্থ নারী হিসেবে প্রতি সপ্তাহেই তার সঙ্গে পরিবারের লোকজন, আইনজীবীদের দেখা করতে দেয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা। আগে প্রতি সপ্তাহে তার পরিবারের লোকজন সাক্ষাৎ করতে পারতেন। কিন্তু এখন সেখানেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। ১১দিন ধরে তার পরিবারের লোকজন সাক্ষাৎ করতে পারেননি। আমি উনার একাধিক মামলার আইনজীবী হয়েও দেখা করার সুযোগ পাইনি।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here