প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রহস্যজনক ও কৌতূহলোদ্দীপক

0
345

খবর৭১: ১/১১ সরকার নিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যকে রহস্যজনক ও কৌতূহলোদ্দীপক বলে মনে করে বিএনপি। বুধবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র-যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল এক আলোচনা সভায় বলেছেন, এক এগারোর সরকারের সময় তাকে গ্রেপ্তারের পেছনে কারা ছিল সেই তথ্য জানা গেছে। তিনি বলেছেন, তাদের বিষয়ে হিসাব পরে নেয়া হবে।

রিজভী হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য রহস্যজনক ও কৌতূহলোদ্দীপক। ১/১১ এর সরকারের এক্সটেনশন বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। ১/১১ এর ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা করে দেয়ার শর্তে ষড়যন্ত্র করে তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।

তিনি বলেন, মাইনাস টু ফর্মূলা বাস্তবায়ন করার জন্য ১/১১ এর সরকার উঠেপড়ে লেগেছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সে সময় তাদের সাথে আঁতাত করে চিকিৎসার নামে কারাগার থেকে বের হয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। আবার বিদেশ থেকে ফেরার পর বিমানবন্দরে নেমে দায় মুক্তির ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে ১/১১ সরকারের সকল কাজের বৈধতা দিবে। তিনি তাদের সমর্থনে সরকার গঠন করে তাদের শুধু দায় মুক্তি দেননি পুরস্কৃতও করেছেন। তাই গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে হ্যামলেট নাটকের একটি উক্তি মনে পড়ছে- ‘ডেনমার্কে কিছু পচছে’। কি এমন হলো এতবছর পর তিনি উল্টো কথা বলতে শুরু করলেন। এখনওতো আপনি ক্ষমতায়, তাহলে পরে কেন, এখন বিচারের মুখোমুখি করছেন না কেন এ প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

প্রধানমন্ত্রী বিদ্বেষ ও উগ্রতা দিয়ে মুক্তিযদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চান এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পূর্ণভাবে অবিশ্বাসী। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, মানুষের ইচ্ছার বাস্তব প্রতিফলন। কিন্ত সেই বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে নিজের জমিদারি মনে করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষা করা, কিন্তু বৈদেশিক নীতি এতোই পরনির্ভরশীল যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই অন্যের কথা শুনে দেশ শাসন করেন, তা না করলে তাঁর গদিওয়ালা চেয়ার চোরাবালিতে ডুবে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে একদলীয় শাসন চালু রেখে বিনাশ ও সংকীর্ণতার পথে দেশকে ঠেলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক স্বৈরাচারের খেতাব পাওয়র পরেও তিনি নির্বিকার ও বেপরোয়া।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সরকার এখন ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এদেশ তো কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো দলের নয়, এদেশ জনগণের। এদেশে অন্যায় করে কেউ পার পায়নি। অন্যায়ভাবে কোনো দিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। বর্তমান আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরশাসকও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামীতে জনগণের প্রতিনিধিরা দেশ চালাবে। যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে- দেশের মালিক জনগণ। জনগণের অধিকার আছে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করার। সে অধিকার থেকে আজ জনগণকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম চলছে সেটি জেল জুলুম, এবং অমানবিক নির্যাতন আর বেআইনিভাবে হত্যা করে দমানো যাবে না। আন্দোলনের মাধ্যমেই বর্তমান স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সাজা দেয়ার প্রতিবাদে আগামী ২৯ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here