মিরসরাই প্রতিনিধিঃ
দেশের বৃহত্তম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে মিরসরাইয়ের চরাঞ্চলে। চরাঞ্চলের পূর্ব ও পশ্চিম ইছাখালী এবং চরশরত মৌজার বেড়িবাঁধ এলাকার কৃষি জমির মালিকরা দাবী করেন একটি অসাধু চক্র সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চলের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনফসলী কৃষিজমি অধিগ্রহণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে চরাঞ্চলের অনাবাদী ৫০ হাজার একর জমি চিহ্নিত করে তম্মধ্যে ৩০ হাজার একর জমির উপর অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও অনেকদূর এগিয়েছে।
এদিকে তিনফসলী কৃষিজমি অধিগ্রহণ বন্ধ করার দাবীতে সোমবার (২ জুলাই) উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের বামনসুন্দর দারোগারহাট বাজারের এম.কে আলীশান ক্লাবে মিরসরাই চরাঞ্চলের মালিকানা জমি রক্ষা ফোরামের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। চরাঞ্চলের মালিকানা জমি রক্ষা ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হকের সভাপতিত্বে এবং ওহিদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাটাছরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী হুমায়ুন, মিঠানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম, চরাঞ্চলের মালিকানা জমি রক্ষা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ডিপটি, সমন্বয়ক নিজাম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা হোছনের জামান বলী, আলা উদ্দিন শামীম, মাওলানা খোরশেদ আলম, সাইফ উদ্দিন প্রমুখ।
মিরসরাই চরাঞ্চলের মালিকানা জমি রক্ষা ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হক বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম ইছাখালী মৌজার ৬ নম্বর সীট থেকে ১০ নম্বর সীট পর্যন্ত এবং চরশরত মৌজার আংশিকসহ বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিম পাশের আংশিক কৃষি জমি ও মৎস্য খামার রয়েছে যার আর.এস, পি.এস, বি.এস খতিয়ানভূক্ত নামজারী চূড়ান্ত করা এবং ৫ হাজার দাগ সম্পূর্ণ মালিকানাও তিনফসলী জমি। এসব জমিগুলোতে বিভিন্ন ধরণের ফসল চাষাবাদ ও মৎস্য উৎপন্ন হয়। ওইসব জমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে একটি মহল অধিগ্রহণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যা অনতিবিলম্বে বন্ধ না হলে আরো তীব্র আন্দোলন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ইতিপূর্বে তিনফসলী মালিকানা জমি অধিগ্রহণ বন্ধের দাবীতে মিরসরাইয়ের সাংসদ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এসময় তিনি আশ্বাস দেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করবেন।
মিরসরাই চরাঞ্চলের মালিকানা জমি রক্ষা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ডিপটি, সমন্বয়কারী অহিদুজ্জামান ও নিজাম উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ রয়েছে তিনফসলী জমিতে কোনপ্রকার শিল্পকারখানা স্থাপন করা হবে না। ইতিমধ্যে সরকার চরাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার খাসজমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে একটি মহল তিনফসলী জমি অধিগ্রহণের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, যাতে করে মানা হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও।
তারা আরো বলেন, উপকূলীয় বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে মুহুরী প্রজেক্ট থেকে ডোমখালী পর্যন্ত স্বদীপ চ্যানেল সংলগ্ন প্রায় ৫০ হাজার একর অনাবাদী খাসজমি রয়েছে তা মিরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য যথেষ্ঠ।