প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণায় কূটচাল রয়েছে’

0
356

খবর৭১: বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা বাতিলের ঘোষণা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এই ঘোষণায় কূটচাল রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে যখন এতো আন্দোলন তাহলে কোটা পদ্ধতিই বাতিল করা হলো। শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছে না, তারা আন্দোলন করছে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে। দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সরকারের সাবেক অর্থসচিব ড. আকবর আলী খান ছাত্রছাত্রীদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আশাব্যঞ্জ্যক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।

রিজভী বলেন, কিন্তু গতকাল জাতীয় সংসদে এই কোটা বাতিলের কথা বলে প্রধানমন্ত্রী গোটা জাতিকেই হতাশ করেছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের দাবিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কোটা বাতিলের কথা বলেছেন। সরকার মুক্তমন নিয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের কোটা সংস্কারের দাবিকে আমলে নেননি।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল)সকাল ১১ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, কোটা দেয়ার বিধান সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী ও চাকরিপ্রার্থীরা বারবার মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কোটার বিরোধিতা করেনি। গতকাল সরকার প্রধানের কোটা বাতিলের ঘোষণা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এই ঘোষণায় কূটচাল রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দমানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে যত না কোটা সংস্কার আন্দোলনের মূল সমস্যাটি সমাধানের দিক নির্দেশনা এসেছে, তার চেয়ে বেশি এসেছে ক্ষোভ প্রকাশ, বিরক্তি ও হুমকি। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের যে ঘোষণা দিলেন সেটি বাস্তবায়িত হলে এর বিরুদ্ধে যে কেউ রিট করলে তা খারিজ হয়ে যাবে। কারণ সংবিধানে এ বিষয়টি নিয়ে সুষ্পষ্ট বিধান রয়েছে। কিন্তু কোটার যে বিষয়গুলো বিধানে নেই, সেগুলি সংবিধান সংশোধন ছাড়াই সরকার সংস্কার করে তা কমিয়ে আনতে পারে।

বিএনপির নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তবের পরও আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং রাতেই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে চারটি মামলাও হয়েছে। তাহলে স্পষ্টতই বোঝা যায়, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পরে আন্দোলনকারীদের ওপর এই হামলা ও মামলায় অশান্তি বাড়বে বৈ কমবে না। আসলে আওয়ামী লীগের সকল কাজই প্রকৃতপক্ষে এক ছল। প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবারও শপথ ভঙ্গ করলেন।

কোটা সংস্কার নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাবির শিক্ষক ড. মামুন আহমেদের কথোপকথন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেই তো আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোটা নিয়ে কথা বলেছেন এটা আমরা গণমাধ্যমক কেউ জানিয়েছিলাম। দেশে একটা আন্দোলন হচ্ছে তিনি তার মতামত জানাবেন না? অবশ্যই জানাতে পারেন। তিনি একশোবার কথা বলতে পারেন তিনি তো অন্যায় কিছু বলেননি। এটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সমাপাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here