খবর৭১ঃ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘোষণা কিংবা আশ্বাসে বিশ্বাস করাটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বড় ভুল ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেছেন, ‘সব কোটা বাতিল করা হবে- সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এমন বক্তব্যকে বিশ্বাস করাই সবচেয়ে বড় ভুল ছিল কোটা আন্দোলনকারীদের।’
সোমবার (২৩ জুলাই) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে নাগরিক ঐক্যর উদ্যোগে “কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিপীড়ত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং আমাদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাস করার কি দরকার? কারণ তিনি যা বলেছেন তার সব ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আপনারা যদি কোটা সংস্কার চান তাহলে কারো ওপর মায়া করা যাবে না। ধরবেনই যদি তবে জায়গা মত ধরবেন, যাতে নড়তে না পারে।’
মান্না বলেন, ‘দেশের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ যে সমস্যা তার সমাধান চাইলে আগে বর্তমান সরকারকে গদি থেকে সরাতে হবে। আর গদি থেকে সরাতে হলে সরকারের কোথাও না কোথাও ধরতে হবে। এমনভাবে ধরতে হবে যাতে তারা দাবি মানতে বাধ্য হয়।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘এখন মার খাওয়ার সময় নাই। রুখে দাঁড়াতে হবে এখন। কখন কীভাবে রুখে দাঁড়াবেন তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আন্দোলন যখন করবেন করার মত করবেন।’
সংহতি সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সে চেতনা থেকে বের হয়ে গেছি। তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ মুক্তিযোদ্ধাকে, বঙ্গবন্ধুকে অনায়াসে অপমান করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করছেন। আমরাও করছি। কোটা নিয়ে বৈষম্য সেটারই প্রমাণ করে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘দেশ আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে গণতন্ত্র বলতে আর কিছুই নেই। ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। তারপরও তিনি কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ৪/৫ ঘণ্টা অবস্থান করার পর তার ওপর হামলা করেছে। দেশে কি আইন আছে? প্রশাসন আছে? কোর্টের মধ্যে প্রশাসন থাকা অবস্থায় কীভাবে তার ওপর হামলা হয়?’
মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার সাথে কোটার যোগসূত্র আছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেরে দেখেছে কিছু হয় নাই। তাই তারা জানান দিয়েছে যে কারো ওপর তারা হামলা করলে তাদের কিছুই হয় না।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, জাতীয় পার্টি (জাফর) এর প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
খবর৭১/এসঃ