প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল দেয়ার আহ্বান সংসদে

0
236

খবর ৭১ঃ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক ও উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, দর্শন-চিন্তা কারণে আন্তর্জাতিক পুরষ্কার ইন্টার প্রেস সার্ভিস নিউজ এজেন্সির দেয়া ‘হিউম্যানটারিয়ান এওয়ার্ড’ এবং গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের দেয়া ‘স্পেশাল ডিসটিংশান এওয়ার্ড ফর লিডারশিপ’ পুরষ্কারে ভূষিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে জাতীয় সংসদ। মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ (১) বিধি অনুযায়ী আনীত প্রস্তাবের (সাধারণ) নোটিশের উপর আলোচনা শেষে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা শুক্রবার
সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার প্রস্তাবটি উত্থাপণ করলে তার সমর্থনে প্রায় ৩৪ জন এমপি-মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা করে বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় কয়েকজন বক্তা প্রায় ১০-১২ লাখ অসহায়, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় এবং শান্তি ও মানবিকতায় উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করার আহ্বান জানান।

এসময় বক্তারা বিএনপিসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের নীতিহীন জোট করায় নিন্দাও জানান। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ড. কামাল হোসেন খুনীদের সঙ্গে জোট করেছেন। যারা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পায়তারা করছে তাদের সাথে তিনি জোট করলেন। জোটের তীব্র সমালোচনা করে দীপু মনি বলেন, তারা কোন রবার্টের অপেক্ষায় আছেন, যারা তাদেরকে অবৈধপথে ক্ষমতায় নিয়ে যাবে? এমপি বাহাউদ্দীন নাসিমও বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের জোটকে এক অশুভ ইঙ্গিত বলে অভিহিত করেন।

রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২৮ বছর দেশ অবহেলিত ছিল। দেশের কোন উন্নয়ন ঘটেনি। যদি এই ২৮ বছর শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার সুযোগ পেতেন তাহলে দেশ আজ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো। আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ২৯টি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন, যা অনন্য। অপর পক্ষে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জীবনে একটি খেতাব তো দুরের কথা বরং এতিমের টাকা আত্মস্বাৎ করে বর্তমানে জেলে। তার আমলে দেশ সন্ত্রাসী ও দরিদ্র রাষ্ট্র হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, বর্তমানে সারা পৃথিবী রক্তাক্ত। সৌদী আরব, ইসরাইলসহ সব দেশে অস্থিরতা। কিন্তু শেখ হাসিনা এ অঞ্চলকে শান্ত রাখতে সমর্থ হয়েছেন। এ নাফ নদী বারে বারে রক্তাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের কত সমস্যা, তারপরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারীকে যে মহিয়সী বলা হয় তা তিনি পরিপূর্ণ নারী হিসেবে অভিহিত হয়েছেন।

মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া উদারতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। তিনি তলিয়ে যাওয়া দেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত করেছেন। বার বার স্বাধীনতা বিরোধী জোট দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে। নতুন করে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি করা হয়েছে, যারা গণতন্ত্র ও আদর্শকে বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল তাদের সঙ্গে জোট করায় তিনি কামাল হোসেনকে নিন্দা জানান। এই জোটের একজন নারী অবমাননার দায়ে কারাগারে গিয়েছেন। তার সঙ্গে ড. কামালের কিভাবে জোট হয়। এটি আদর্শ ও নীতিবিহীন জোট. এটি ভণ্ডামী ছাড়া কিছুই নয়। ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ও জামাতা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়ায় তারও নিন্দা জানান তিনি।

ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিশ্ব আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবিকতার প্রতীক আর যোগ্য নেতৃত্ব বলছে আর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অপরাধ, লুন্ঠন ও ক্ষমতা অপব্যবহারকারীর নিদর্শন। তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার দাবি জানান।

এ প্রস্তাবের উপর অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, জয়া সেনগুপ্ত, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মনিরুজ্জামান ইসলাম, বিরোধী দলের এমপি ফখরুল ইমাম, সাবিনা আক্তার তুহিন প্রমুখ। বক্তারা রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্চ বলে মন্তব্য করে মিয়ানমার কর্তৃক বিতাড়িত, নির্যাতিত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়ায় বিশ্বে এক মানবিকতার নজির সৃষ্ঠি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, মিয়ানমার সরকারের সেনা বাহিনীর নির্যাতন, হত্যা, অগ্নি সংযোগ ইত্যাদির বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমতকে একত্রিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে সচেষ্ট হয়েছেন। মিয়ানমারকে এসব বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে সফল হয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here