প্রতিদিন কয়টি ডিম খাবেন?

0
331

খবর৭১ঃ সবাই বলে ডিম খাওয়া উচিত। গবেষণা অনুসারে ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, সেই সঙ্গে রয়েছে প্রোটিন এবং আরো এমন অনেক উপকারী উপাদান, যা শরীরের প্রতিটি অংশকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। ফলে ডিমে খেতেই হবে। তবে ইচ্ছা হলে চিকিৎসেকর পরামর্শও নিয়ে নিতে পারেন!

নিয়মিত ডিম খাওয়া শুরু করলে সাধারণ যে যে উপকারগুলো মেলে, সেগুলো হলো…

১. পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ডিম খাওয়া শুরু করলে শরীরে প্রোটিনের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে পেশির ক্ষমতা বাড়তে সময় লাগে না। এই কারণেই তো যারা নিয়মিত শারীরিক কসরত করেন, তাদের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

২. ভাবী মায়েদের জন্য উপকারী : প্র্যাগন্যান্সির সময় অনেক মায়ের শরীরেই নানাবিধ রোগ বাসা বেঁধে বসে। তবে এমনটা হওয়া থেকে মায়ের শরীরকে বাঁচানো যায় কিন্তু, যদি নিয়মিত ডিম খাওয়া যায় তো। আসলে বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে ভাবী মায়েরা যদি প্রতিদিন ডিম খান, তাহলে তাদের শরীরে স্পাইনা বিফিদা নামক একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে কোনো রোগই মায়ের শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না, বিশেষত কনজেনিটাল ডিসেবেলিটির মতো সমস্যা দূরে থাকে। সেই সঙ্গে বাচ্চার শরীরও চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে : বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ডিমের অন্দের উপস্থিত সেলেনিয়াম দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে, কোনো ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়, সেই সঙ্গে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
ব্রেকফাস্টে যদি একটার জায়গায় দুটি করে ডিম খাওয়া যায়, তাহলে বেশি উপকার মেলে।

৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় : শুনতে আজব লাগলেও একথা ঠিক যে প্রতিদিনের ডায়েটে ২-৩টি ডিম জায়গা করে নিলে শরীরে এত মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রবেশ ঘটে যে তার প্রভাবে ত্বকের ভেতরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা সব বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে তখনও কিন্তু ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে নিয়মিত ২-৩টি করে ডিম খাওয়া শুরু করলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে উঠতে সময় লাগে না।

৫. প্রোটিনের ঘাটতি মেটে : ডিমে উপস্থিত অ্যালবুমিন নামে এক ধরনের প্রোটিন পেশির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এনার্জি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও সকাল সকাল ডিম খাওয়াটা জরুরি।
যারা সকালে নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তারা ডিম খেতে ভুলবেন না যেন! এমনটা করলে দেখবেন একাধিক রোগ আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।

৬. ওজন কমতে শুরু করে : একেবারেই ঠিক শুনেছেন। ডিম খেলে ওজন বাড়ে না। বরং কমে! পেনিংটন বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের করা এক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সকাল সকাল ডিম খেলে দিনের অনেকটা সময় পর্যন্ত ক্ষিদে পায় না। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালরি জমার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকবাবেই ওজন কমতে শুরু করে। তাই যারা ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়ম করে ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
পোচ অথবা সেদ্ধ ডিম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাতে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

৭. এনার্জির ঘাটতি দূর হয় : সকাল ঘুম থেকে ওঠার পর ঠিক কোনো জিনিসটার বেশি করে প্রয়োজন পরে বলুন তো? এনার্জির! একেবারেই ঠিক। তাই তো সকালেই একটা ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিতে হবে। তাহলেই দেখবেন ক্লান্তি তো দূর হবেই, সেই সঙ্গে কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। আসলে ডিমে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান নিমেষে দেহের প্রয়োজনীয় জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। ফলে শরীরের চনমনে হয়ে উঠতে একেবারে সময়ই লাগে না।

৮. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : বুদ্ধির জোর বারাতে কে না চায় বলুন! আপনিও যদি সেই দলে থাকেন, তাহলে কাল সকাল থেকেই ডিম খাওয়া শুরু করুন। আসলে ডিমে উপস্থিত বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান মস্তিষ্কের ক্ষমতা মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগও বৃদ্ধি পায়।
ডিমে কোলিন নামে একটি উপাদান থাকে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৯. খিদে মেটে : ব্রেকফাস্টে দুটো ডিমের অমলেট বা পোচ খেয়ে দেখুন তো কী হয়! দেখবেন দুপুরের আগে ক্ষিদে পাওয়ার নামই নেবে না। তাই যাদের সকাল সকাল অফিসে বেরতে হয়, তারা ব্রেকফাস্ট না করার পরিবর্তে দুটি ডিম সেদ্ধ খেয়ে বেরিয়ে পরুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! এমনটা করলে শরীরের অন্দরে ভাঙন তো ঘটবেই না, উল্টে ক্ষিদের জ্বালা কমবে এবং পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে।

১০. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে : ডিমে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, লুটিন এবং জিয়েক্সসেনথিন নামে বেশ কিছু উপকারি উপাদান দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ছানি হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here