পোষ্য কুকুরের বদৌলতে ধনকুবের বনে চীনা যুবক

0
266

খবর ৭১ঃবছর চারেক আগে মুক্তি পাওয়া ‘এন্টারটেইনমেন্ট’ ছবির কথা মনে আছে? কোটিপতি মালিক তার সব সম্পত্তি লিখে দিয়েছিলেন আদরের পোষ্য এন্টারটেইনমেন্টকে। ঠিক যেন তার বিপরীত ঘটনা ঘটল চীনে।

একটি কুকুরের বদৌলতে ধনকুবের হয়ে গেলেন তার মালিক।

ঘটনা হচ্ছে এমন- বেইজিংয়ের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। সেটির আশপাশে কেউ ঘেঁষেওনি এত দিন। সেখানেই এখন বিশাল ম্যানসন।-খবর আনন্দবাজারপত্রিকা অনলাইনের।

মে মাস থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাসাদটি। দুই একর জমিতে রয়েছে অতিথিশালা। রয়েছে স্পা, ইনডোর পুল ও ট্রাম্পোলিন। রয়েছে পার্টিরুম। চকবোর্ড ওয়ালও রয়েছে আঁকিবুকির জন্য।

আর রয়েছে সাইলারের দুটি মূর্তি।

সাইলার কে জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই! পাঁচ লাখ ডলারের বাড়িতে যে থাকে, সে নিশ্চয়ই বিশেষ কেউ। সাইলার আসলে সেই কুকুর, চীনে যাকে বলা হচ্ছে- ‘কালচারাল অবসেশন’।

৩১ বছর বয়সী ঝৌ তিয়াংশিয়াও নামের এক যুবক সাইলার নামে কুকুরটি পোষেন। তিনি বলেন, ওর জন্যই আমার সব কিছু। ও আসার আগে আমার কিছুই ছিল না।

বেইজিং শহরের চারপাশে কান পাতলেই সাইলারের নাম শোনা যাচ্ছে। সে এখন একটা সেলিব্রেটি প্রাণী।

সাইলার আর ঝৌয়ের গল্পটি কিন্তু একদম চলচ্চিত্রের মতোই। চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাও জে দংয়ের আমলে কুকুর নিয়ে নানারকম বিধিনিষেধ ছিল। তবে পরে তা শিথিল হয়।

চার বছর আগে পর্যন্ত স্কুলছুট ঝৌ দাদির সঙ্গে থাকতেন আর ভিডিও গেমস খেলে দিন কাটাতেন। কোনো রকমে খাওয়াটুকু জুটত তাদের। এমন সময় তার বন্ধু পোষ্য কেনার কথা বলেন। ঝৌ খুব সস্তায় একটি কুকুরছানা কেনেন।

প্রিয় শোর সুপারহিরোর চরিত্র থেকে ঝৌ তার পোষ্যের নাম দেন সাইলার। আসলে সাইলার তার কাছে প্রথম দৃষ্টিতেই প্রেমে পড়ার মতো।

সাইলার তো মানুষের মতোই হাঁটে। হাইফাইভের মানে জানে। টেবিলের ওপর বালিশ মাথায় ঘুমাতে যায়। আর এসবই ইউটিউব ভিডিও দেখে ঝৌ শিখিয়েছিলেন সাইলারকে। শিখিয়েছিলেন লেডি গাগার গানের সঙ্গে নাচতেও।

সাইলারের এই ভিডিও ঝৌ শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার পরই সাদা-কালো রঙের মিশেলে এই দস্যিটা সবার মন জয় করে নিয়েছে। সাইলারের আট লাখেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে সামাজিকমাধ্যমে।

ভিডিও জনপ্রিয় হওয়ার পর থেকেই ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে ঝৌয়ের। ভিডিও প্রতি মিলতে থাকে টাকা। প্রত্যেকে সাইলারকে দেখতে চায়। আদর করতে চায়। ভিডিও থেকে পাওয়া টাকা জমিয়েই সাইলারের জন্যই ওই পরিত্যক্ত বাড়িটাকে বছর দুয়েক আগে কেনে ঝৌ। শুরু হয় তার মেকওভার।

পোষ্যদের জন্য বিশেষ খাবার আর খেলনার ই-কমার্স সাইটও খুলে ফেলে। ফুলেফেঁপে ওঠে ব্যবসা। এই ম্যানসনেই তার পোষ্যদের জন্য পার্লার ও স্পা রয়েছে। যেখানে কুকুরেরা অয়েল ম্যাসাজও করতে পারে ৪০০ ডলারের বিনিময়ে। রয়েছে ২৬ ডলারে পোষ্যদের মেডিসিনাল স্পার ব্যবস্থাও। এভাবে দু’বেলা ঠিকমতো খেতে না পাওয়া ঝৌ এখন ধনকুবের ব্যবসায়ী।

তবে ঝৌয়ের একটিই ভাবনা- প্রিয় সাইলার যেন ভালো থাকে। এতজন সঙ্গীর সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ করে যেন ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সাড়ে চার বছরের সাইলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here