রাকিব হাসান, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় অপারেশনালসহ চলমান কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কার্যক্রমের গতি বেড়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ আগস্ট, শুক্রবার পাঁচ তলা প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ১১ কোটি এক লাখ ৮২ হাজার ২০৯ টাকা ব্যয় ভবনটি নির্মিত হয়েছে। এছাড়াও পায়রা বন্দর নির্মাণে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে তিনটি কোর্সের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও আনুষ্ঠানিকভাবে একই দিন শুরু হচ্ছে। এসব উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের মেম্বার (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার এম রাফিউল হাসান জানান, অপারেশনাল কার্যক্রমে গতি আনতে প্রশাসনিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি মূলত জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপুরনের পরে তাঁদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মদক্ষতার উন্নয়নে প্রশিক্ষিত করা প্রয়োজন। সেই অভাব পুরন করতে প্রথম পর্যায়ে দেড় শ’ পরিবারকে তিনটি কোর্সে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এপ্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। নির্মাণ শ্রমিক, ড্রাইভিং ও কম্পিউটারের বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রথম পর্যায়ে চালু করা হবে। তিন মাস ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন হবে। দুই বছরে অন্তত ৪২০০ মানুষকে ২৯টি কোর্সে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এমনকি প্রয়োজনে এ কোর্সের সংখ্য আরও বৃদ্ধি হবে বলে জানান। যুব উন্নয়ন অধিদফতরসহ সরকারের বিভিন্ন দফতর এসব কাজে সহায়তা করবে। তিনি আরও জানান, পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের চাহিদার ওপরে ভিত্তি করে প্রশিক্ষণের কোর্সসংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। পায়রা বন্দরকে ঘিরে বিশাল কর্মযজ্ঞের একটি অংশ হিসেবে এসব কর্মকান্ড শুরু হচ্ছে।
একইসুত্রে জানা গেছে, পায়রা বন্দরের মূল চ্যানেল রাবনাবাদ পাড়ের চারিপাড়ায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৬০০ মিটার দীর্ঘ টার্মিনাল। উল্লেখ্য ২০ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭১৩ টাকা ব্যয় পায়রা বন্দরে ওয়ার হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিত ওয়ার হাউসের দৈর্ঘ ৪০০ ফুট, প্রস্থ ২৫০ ফুট, উচ্চতা ২০ ফুট। এক লাখ বর্গফুট আয়তন নিয়ে ওয়ার হাউসটি নির্মিত হলেও এর ডেলিভারি এলাকার আয়তন ৩২ হাজার ৮০০ বর্গফুট। এছাড়া ২১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৬৮ টাকা ৯১ পয়সা ব্যয় সার্ভিস জেটির নির্মাণ কাজ চলছে। ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করছে। ৮০ মিটার দীর্ঘ ২৪ মিটার প্রস্থ এ জেটি দিয়ে মালামাল লোডিং আনলোডিং এর কাজ করা হবে। এ জেটিতে পাঁচ মিটার ড্রাফট জাহাজ সরাসরি পণ্য নিয়ে ভিড়তে পারবে। বর্তমানে একটি পন্টুন জেটি থাকলেও পন্যখালাশের সুবিধার্থে এই সার্ভিস জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
২০১৩ সালের ১৯ নবেম্বরে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতের ছোঁয়ায় শুরু হওয়া পায়রা বন্দরের এ কর্মযজ্ঞের ধারা চলবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত।
খবর৭১/এসঃ