পাইকগাছায় ভিপি বন্দোবস্ত জমির দখল ও বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা

0
253

আমিনুল ইসলাম বজলু,পাইকগাছা (খুলনা) :
পাইকগাছায় সরকারি ভিপি বন্দোবস্ত জমি নিয়ে একই এলাকার দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। সুকুমার হোড় ও শ্যামলী দাসের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। সুকুমার হোড়ের অভিযোগ শ্যামলী দাসের একসনা বন্দোবস্তের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নালিশী সম্পত্তি থেকে গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছেন। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করে রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে গাছ কেটেছেন বলে দাবি করেছেন শ্যামলী দাস। নালিশী জমির দখল ও বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী। গাছ কর্তনের সুষ্ঠু তদন্ত সহ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়নের কাটিপাড়া গ্রামের মৃত গোবিন্দ হোড়ের ছেলে সুকুমার হোড় (৬১) জানান, কাটিপাড়া মৌজায় এসএ ৩১২১, ৩২২৯, ৩২৪৪ সহ বিভিন্ন দাগ হতে আমার দাদা মৃত মাদার চন্দ্র পাল জনৈক যতিন্দ্রনাথের নিকট থেকে ১৯৯৩ সালে ১.৯০ একর জমি দলিল করে দেয়। রেকর্ড না করায় ১৯৬৫ সালে তৎকালীন সরকার উক্ত সম্পত্তি শত্র“ (এনিমি) সম্পত্তি করে নেয়। এরপর ১৯৭৬-৭৭ সালে উক্ত সম্পত্তি দাদা ও আমার নামে ডিসিআর কাটি। এরপর ৭৮ ও ৭৯ সালে ৩২২৯ হতে ৩২৪৪ দাগের মধ্য হতে ৯৫ শতক জমি সুকুমার নিজের নামে এবং ৩১২১ দাগে ৯৫ শতক জমি মলয় মিত্রের নামে বন্দোবস্ত নেওয়া হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত এই দু’জনের নামে বন্দোবস্ত নিয়ে ভোগদখল করে আসছিলাম বলে সুকুমার জানান। তারপর ২০১১ সালে মলয়ের নামের ৯৫ শতক জমিও সুকুমার নিজের নামে ডিসিআর কাটে। ২০১২ সালে শরিক দাবি করে একই এলাকার লক্ষণ দাসের স্ত্রী শ্যামলী দাস উক্ত বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে পাইকগাছা সিনিয়র জজ আদালতে দেওয়ানী ১৬৩/১২ নং মামলা করে। বিজ্ঞ বিচারক চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে শরিক প্রযোজ্য নয় মর্মে ১৯/৬/১৩ তারিখ মামলাটি খারিজ করে দেন। এরপর শ্যামলী দাস বাদি হয়ে ২০১৬ এডিসি বরাবর ৫৫/২০১৬ নং মামলা করলে ৪/১২/১৭ তারিখে শ্যামলী দাসের অনুকূলে আদেশ হয়। এর বিরুদ্ধে সুকুমার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব বরাবর ৪-২৩/২০১৮ ভিপি রিভিশন আপীল মামলা করে। ৬/২/২০১৮ তারিখে ভূমি আপীল বোর্ড নিম্ন আদালতের কার্যকারিতা স্থগীত থাকবে মর্মে এলসিআর তলব করার জন্য আদেশ দেন। সুকুমার হোড় অভিযোগ করেন, আদালতের কোন রায় শ্যামলী দাসের অনুকূলে নাই। আবার একসনা যে বন্দোবস্ত নিয়েছিল তার মেয়াদও ৩০ চৈত্র শেষ হয়ে গেছে। অথচ নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শ্যামলী নালিশী সম্পত্তির গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ লক্ষণ দাসের স্ত্রী শ্যামলী দাস জানান, ক্রয় ও শরিক সূত্রে ১৯৬৩ সন হতে এবং বাংলা ২০২১ সন হতে ডিসিআর সূত্রে নালিশী সম্পত্তি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছি। ৩০ চৈত্র ডিসিআর’র মেয়াদ শেষ হওয়ায় নবায়নের জন্য আবেদনও করেছি। যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুকুমার হোড় ৩১২১ দাগের যে ৯৫ শতক জমি দাবি করছে তা নালিশী সম্পত্তির পশ্চিম পাশে রয়েছে। সেখানে না গিয়ে আমার রেকর্ডীয় ২ একর ১৯ শতক জমির মধ্যে দখল করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও সুকুমার হোড় ১৯৬৩ সালের যে দলিল মুলে দাবী করছে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি সে দলিলটি তঞ্চকীপূর্ণ। নালিশী সম্পত্তির গাছ কাটা প্রসঙ্গে শ্যামলী দাস জানান, আমি যে সব গাছ কেটেছি তা আমার রেকর্ডীয় সম্পত্তির গাছ। বর্তমানে উক্ত নালিশী সম্পত্তি নিয়ে সুকুমার হোড় ও শ্যামলী দাসের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। যে কোন মুহূর্তে উভয়ের মধ্যে সংঘাত, সংঘর্ষ ঘটতে পারে এমন আশংকায় সংশি্ষ্ট প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here