পাইকগাছার হাড়িয়া নদীর উপর নির্মিত কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে বিস্তীর্ণ জনপদের হাজার হাজার মানুষ

0
347

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ পাইকগাছার হাড়িয়া নদীর উপর শঙ্কদানা কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় অবহেলিত জনপদের লতাসহ কপিলমুনির বিস্তীর্ণএলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বেশ কিছুদিন পূর্বে ব্রীজের সিংহভাগ ভেঙ্গে পড়ায় সেই থেকে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সাধারন মানুষ কোন রকম নদী পার হলেও বন্ধ রয়েছে সাইকেল থেকে শুরু করে সকল প্রকার যানবহন চলাচল। ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ার খবরে দেরিতে হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ঠিক কবে নাগাদ ব্রীজটি সংষ্কার বা পুণঃনির্মাণ হতে পারে তা নিশ্চিত করেনি কেউ। এলাকাবাসী জানায়, এলাকাবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ও লতা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হাড়িয়া নদীর উপর ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি কাঠের ব্রীজ নির্মাণ করে। ব্রীজের এক প্রান্তে রয়েছে উপজেলার লতার শঙ্কদানা ও তেঁতুলতলা অন্য প্রান্তে রয়েছে কপিলমুনি ইউনিয়নের বারুইডাঙ্গা। দু’টি ইউনিয়নই সুন্দরবন উপকূলীয় চিংড়ি অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার শত শত চিংড়ি চাষী (ঘের মালিকরা) যাতায়াতসহ ঐ এলাকায় উৎপাদিত মাছ উপজেলা ও বানিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনিতে সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম কাঠের ব্রীজটি। এছাড়া দুর্গম পানি বেষ্ঠিত দ্বিপাঞ্চলের বহু ছেলে-মেয়ে পড়া-লেখা করে উপজেলা কিংবা কপিলমুনির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এর আগে ২০১৪ সালে ব্রীজটি অনুরুপ ক্ষতিগ্রস্থ হলে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তা সংষ্কার করলেও ভারী মালামাল বহনে পরের দিনই তা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এরপর সর্বশেষ বেশ কিছুদিন পূর্বে ফের কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়লে সদরের সাথে এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গোটা এলাকা। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ২শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে পুরাতন ব্রীজটির লতা প্রান্তের সিংহভাগ ভেঙ্গে পড়ায় ইঞ্জিন চালিত নছিমন-করিমন, ভ্যান-সাইকেলসহ সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমনকি সাধারণ মানুষও পার হতে পারছে না। এরপরও জরুরী প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ব্রীজের উপর দিয়েই কোন রকম পার হচ্ছেন। এমন অবস্থায় ব্রীজে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে কোন বড় ধরণের প্রাণঘাতি দূর্ঘটনা। খবর পেয়ে ইতোমধ্যে পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলীর নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন, কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার ও লতা ইউপি চেয়ারম্যান দিবাকর বিশ্বাসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন কবলিত ব্রীজটি পরিদর্শনে গেলেও ঠিক কবে নাগাদ তা পূণঃনির্মাণ বা সংষ্কার হবে তা নিশ্চিত করেনি কেউ। স্থানীয় ইউপি সদস্য কৃষ্ণ রায় জানান, ব্রীজের অধিকাংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় যাতায়াত নিয়ে এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি টোল আদায়ের শর্তে ব্রীজটি সংষ্কার হবে বলে উপজেলা পরিষদের পক্ষে তাদেরকে আশ্বস্থ করা হয়েছে। এদিকে ব্রীজটি সংষ্কারের খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও শঙ্কা কাটেনি। তারা জানান,স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের পট পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেনি কেউ। বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ৭ বছর পূর্বে স্থানীয় সরকার পরিষদের আওতায় একটি কাঠের ব্রীজ নির্মাণ হয় অথচ এরই মধ্যে তা কয়েকবার ভেঙ্গে পড়লেও স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসী মেরামত করে তা। তবে এবার উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সংষ্কার হওয়ায় তাতে নতুন করে টোল আদায় হবে। এটা তাদেরে কাছে যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here