পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মর্যাদা কমানোর প্রতিবাদে সৈয়দপুরে মানববন্ধন, পরিপত্র প্রত্যাহার দাবি

0
1307
পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মর্যাদা কমানোর প্রতিবাদে সৈয়দপুরে মানববন্ধন

খবর৭১ঃ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকেঃ পরিবার কল্যাণ সহকারীদের তৃতীয় শ্রেণীর মর্যাদা কমিয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে রুপান্তরিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবার কল্যাণ সহকারী সমিতি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সদস্যবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কস্থ সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ওই বক্তব্যে বলা হয়েছে যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শ্রেণী-প্রথা উঠিয়ে দিয়েছেন, সেখানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর গত ৪ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মূল চালিকা শক্তি দেশের সাড়ে ২৩ হাজার পরিবার কল্যাণ সহকারীদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চিহ্নিত করে আমাদের অবমাননা করেছে। তাই অধিদপ্তর কর্তৃক এ ধরণের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে জারি করা পরিপত্র প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় ওই মানববন্ধনে।

সংগঠনটির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শরিফুন নাহার ও সাধারণ সম্পাদক রীনা সাইদা জানান, আমাদের চোখের সামনে চাকুরীকাল শেষ করে শূন্য হাতে আমাদের সহকর্মীদের বাড়ীতে ফিরে যেতে দেখেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর আমাদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করে চাকুরী শেষে পেনশন প্রাপ্তি নিশ্চিত করেন। এটুকু প্রাপ্তির বাইরে আমাদের কপালে আর কিছুই জোটেনি এত বছরে। এমনকি আমাদের টাইমস্কেল, চিত্ত বিনোদন ভাতা, ভ্রমণ ভাতাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা বৈষম্যের শিকার। পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতির ২৮ হাজার সদস্যের মধ্যে আমরা সাড়ে ২৩ হাজার সদস্য হওয়া সত্বেও সংগঠনে আমাদের দাবির প্রতিফলন কখনো দেখিনি। ২০০৮ সাল থেকে নিয়োগবিধি নামক কল্পনার বাণী শুনিয়ে দশ বছর যাবৎ তা বাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ, কল্পনার ঐ নিয়োগ বিধিতে আমাদের প্রাপ্তি কি তাও আমরা জানি না। শুধু তাই নয়, বিগত জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকুরিজীবীদের শ্রেণীবিন্যাস উঠিয়ে দিলেও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরে এক স্মারকপত্রে পরিবার কল্যাণ সহকারীগণকে ৪র্থ শ্রেণী হিসেবে চিহ্নিত করে আমাদেরকে চরমভাবে হেয় করা হয়। অথচ প্রাইমারী সহকারী শিক্ষক আর পরিবার কল্যাণ সহকারীদের চাকুরী এক সময় একই গ্রেডে চিহ্নিত ছিল। প্রশ্ন জাগে তাহলে প্রাইমারী সহকারী শিক্ষকগণ কি কোনকালে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিল।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবার কল্যাণ সহকারী সমিতি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি রেজিনা খাতুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিছ বানু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অনিতা রাণী, অর্থ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মরিয়ম বেগম, সদস্য খালেদা, আফরোজাসহ সৈয়দপুর পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ সহকারীরা। মানববন্ধন চলাকালে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পরিবার কল্যাণ সহকারী পদের নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যুনতম এইচএসসিতে উন্নীতকরণসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ন্যায় ১৫তম গ্রেডে বেতনস্কেল উন্নতি করা, পরিবার কল্যাণ সহকারী পদ থেকে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে ৩০% পদোন্নতির বিধান নিশ্চিত করাসহ টেকনিক্যাল পদ হিসাবে পরিবার কল্যাণ সহকারী পদকে ঘোষণা করা, উন্নয়ন খাত হতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হওয়া পরিবার কল্যাণ সহকারীদের ১০০% পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here