পত্নীতলায় পুলিশী গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি নেতাকমীরা, সাবেক ২ইউপি চেয়ারম্যানসহ এ পর্যন্ত আটক ৩৬

0
226

মো. আবু সাইদ, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: আসন্ন জাতীয় সংসদের আর মাত্র ১দিন বাঁকি। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হলেও নওগাঁর
পত্নীতলায় মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি নেতাকর্মীরা। পুলিশী গ্রেফতার আতংকে তাঁরা নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবুও শেষ রক্ষা হচ্ছে না অনেকের। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় থানা পুলিশ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ের ৩৬জন নেতাকর্মীরা আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ২জন সাবেক চেয়ারম্যান। এরা হলেন দিবর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর শেখ এবং মাটিন্দর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন। এরা উভয়েই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে যুক্ত। এদিকে থানা পুলিশ কর্ত্তৃক এ পর্যন্ত ৩৬জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মামলায় আটকের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রেফতার আতংকে তাঁরা পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়াও বিএনপি’র সক্রিয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
ধামইরহাট-পত্নীতলায় উপজেলা নিয়ে নওগাঁ-২ সংসদীয় এলাকা। এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ মো. শহীদুজ্জামান সরকার। অন্যদিকে ধানের শীষ নিয়ে লড়ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. সামসুজ্জোহা খাঁন। এছাড়াও এ আসনে হাত পাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী প্রভাষক মো. দেলোয়ার হোসেন, গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাকের পার্টির মো. রেজোয়ান ফারুক ও লাঙ্গল প্রতীকে লড়ছেন জাতীয় পার্টির সমর্থিত প্রার্থী মো. বদিউজ্জামান। তবে এই আসনে মূল প্রতিদ্বদ্বীতা হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে।
সরেজমিনে পতœীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাঠে ময়দানে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কর্মী-সমর্থকরা মিছিল, শো-ডাউন, মাইকিং নিয়ে গণসংযোগ করলেও ধানের শীষের প্রচারণার কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে কোন ধরণের উত্তেজনা দেখা যায়নি। কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, যাকে তাঁরা ভালো মনে করবেন গোপন ব্যালটে তাঁকে ভোট দিবেন। বিএনপি নির্বাচনী মাঠে না থাকায় এই ভোটে তাঁরা কোন উৎসাহ ও আনন্দ পাচ্ছেন না বলেও মতদেন।
এদিকে নজিপুর পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডে ও মান্দাইনে অবস্থিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে দুবৃত্ত কর্ত্তৃক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ কর্ত্তৃক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হামিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশী গ্রেফতার আতংকে বিএনপি’র সক্রিয় নেতারা বর্তমানে ঘরছাড়া। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিএনপি সমর্থক সাবেক ২ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশ গ্রেফতার করায় বিএনপি’র নেতাকর্মীদের আংতক বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রেফতার ভয়ে বিএনপি কর্মীরা পোলিং এজেন্ট হওয়ারও সাহস পাচ্ছে না। এমনকি গ্রেফতার এড়াতে তিনি নিজেও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শুধু পত্নীতলায় নয় ধামইরহাট উপজেলায়ও থানা পুলিশ এ পর্যন্ত ২০জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলেও তিনি জানান। পুলিশ কর্ত্তৃক গ্রেফতার ও হয়রানির কারণে নওগাঁ-২ আসনে সুষ্ঠ নির্বাচনের পথ রুদ্ধ হয়েছে বলেও তিনি মতামত দেন।
এ বিষয়ে পত্নীতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে শান্তি শৃঙ্গলা রক্ষার জন্য যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদের আটক করা হচ্ছে। সাধারণ কোন মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে না। একই বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, রাজনৈতিক কোন গ্রেফতার করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here