নড়াইল লোহাগড়ার কালনা মহাসড়কে অবৈধ টোল আদায়

0
550

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যানবাহন থেকে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। নড়াইল লোহাগড়ার কালনা হতে যশোর-খুলনা মহাসড়কে চলাচলকারী সকল প্রকার ছোট-বড় যানবাহন থেকে র্টামিনাল পার্কিং ফির রশিদ দিয়ে টোলের নামে প্রতি মাসে ৮থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ যাত্রী ও ব্যাবসায়ীদের টোলের টাকা অতিরিক্ত ভাড়া এবং পণ্য মূল্যে সংযোজিত হচ্ছে। গোপালগঞ্জের বাস ড্রাইভার শাহাদত শেখ, যশোরের কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার সুমন, ও ট্রাক ড্রাইভার ইয়ার আলী জানান, বিভিন্ন যানবাহন থেকে পৌরসভার টোলের নামে কালনা-যশোর-খুলনা সড়কে চলাচলকারী ছোট-বড় কোন যানবাহনই পৌর এলাকায় পার্কিং করে না বা কোন টার্মিনালও নাই। অথচ লোহাগড়ার এড়েন্দা বাস ষ্টান্ডের পাশে এবং আলামুন্সির মোড় থেকে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে প্রতিনিয়ত ড্রাইভার ও সাধারন যাত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে যাত্রী ও মালামালসহ আটকায় রাখা হয়। চাঁদা আদায়ের জন্য লাঠি নিয়ে বেশ কয়েকজন লোক সড়কের আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকে। ইজিবাইক চালক গোলাম রসুল ও আলমসাধু চালক রবিউল ইসলাম জানান, সিএন্ডবি কুন্দশি,লক্ষীপাশা চৌরাস্তা,জয়পুর জামরুলতলা ও লোহাগড়া বাজারের আড়িয়ারা ভ্যান ষ্টান্ড থেকে বিভিন্ন যানবাহন ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, আলমসাধু, জেএসএ,পন্যবাহী ভ্যান ও পিকআপ’র গতি রোধ করে জোরপূর্বক টোল আদায় করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কোন স্থানে এতো বড় জুলুম ও অরাজকতা দেখিনি। নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার এক দায়ীত্বশীল সুত্র জানায়,স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইনানুযায়ী,পৌরসভার নিজস্ব পার্কিং স্থান না থাকলে পৌর কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ),স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মিত ও তত্ত্বাবধানে থাকা সড়ক গুলোতে কোনো ধরনের টোল আদায় করতে পারবে না। পৌরসভার বিধানের ৯৮ ধারার ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে শুধুমাত্র পৌর কর্তৃপক্ষের নির্মিত টার্মিনাল ছাড়া পার্কিং ফির নামে টোল আদায় সম্পুর্ন অবৈধ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া পৌরসভার নিজস্ব কোনো টার্মিনাল বা পার্কিং ব্যবস্থা নেই। অথচ পৌরসভার পক্ষ থেকে ৬টি স্থান থেকে সিএনজি অটোরিকশা, টেম্পু, জেএসএ, ইজিবাইক, নছিমন. করিমন, আলমসাধু, প্রাইভেটকার ,মাইক্রোবাস, মিনিবাস ও ছোট ট্রাকের গতিরোধ করে ২০ টাকা, বড় ট্রাক ও বহিরাগত বাস থেকে ৪০ টাকা এবং গরুর ট্রাক প্রতি ১’শ টাকা থেকে ২’শ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম এ বিষয় নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, পৌরসভায় কোন টার্মিনাল নাই। টার্মিনাল ছাড়া টেন্ডার,এবং টেন্ডার ছাড়া টোল আদায় কিভাবে করেন,এটা আমি জানিনা! এ ব্যাপারে নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম’র,সাক্ষাতের জন্য দু’দিন পৌর অফিসে গিয়ে না পেয়ে সকাল-দুপুর ও বিকালে তার লক্ষীপাশাস্থ বাড়িতে দেখা যায় তিনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ঘন্টাব্যাপি অপেক্ষা করেও সাক্ষাত না পেয়ে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন-০১৭১৫৬২৩০৪৬,একাধিকবার বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নাই। অপেক্ষমান পৌর সেবা প্রত্যাশী কয়েকজন সাক্ষাত না পেয়ে একে অপরের সাথে আলাপচারিতায় বলেন, পৌর মেয়র অফিসে যায় না। অসূস্থতার কারনে কি যেন ঔষধ সেবন করে শুধু ঘুমিয়ে থাকেন। নড়াইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, লোহাগড়ার কালনা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর-খুলনা মুখী সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর অধীনে। এই সড়কে চলাচলকারী যানবাহন থেকে রশিদের মাধ্যমে যে কোন ধরনের টাকা টোল হিসেবে আদায় করা সর্ম্পুন অবৈধ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম আরাফাত হোসেন (ভারপ্রাপ্ত) এ বিষয়ে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, সড়ক ও জনপথ (সওজ) যদি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চায় তাহলে অবৈধ টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নড়াইলেন জেলা প্রশাসক এমদাদুল হক চৌধুরী এ বিষয় নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, সড়ক ও জনপথে টোল আদায় বা ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে পৌরসভা আইনে কি আছে সেটা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here