উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: পিচ ও খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। এর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরে চলতে বাধ্য হচ্ছে যানবাহনগুলো। এমনই বেহাল দশা নড়াইল-নওয়াপাড়া-ফুলতলা সড়কের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছরেও সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নড়াইল, খুলনা ও যশোরের বাসিন্দাদের। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল-গোবরা-ফুলতলা সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার। এর ২৬ কিলোমিটার নড়াইল সওজের অধীনে। বাকি দুই কিলোমিটার অংশ পড়েছে খুলনার ফুলতলা উপজেলায়, যা খুলনা সওজের অধীনে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ সড়ক দিয়ে নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। নড়াইল থেকে গোবরা পর্যন্ত সড়কের সাত কিলোমিটার অংশ ব্যবহার করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা যশোরের নওয়াপাড়ায় যাওয়া যায়। এতে নড়াইল-নওয়াপাড়া যাতায়াতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা কম যেতে হয়। সড়কটির আশপাশে গোবরা মহিলা কলেজ, গোবরা মিত্র মহাবিদ্যালয়, মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজ, পার্বতী বিদ্যাপীঠ, প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিঙ্গাশোলপুর কে.পি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া গোবরা, মির্জাপুর, রুখালী ও চাকইয়ে বাজার বসে। নড়াইল-নওয়াপাড়া-ফুলতলা সড়ক দিয়ে এসব বাজারে পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়। এর মধ্যে নড়াইল পৌর এলাকার মাছিমদিয়া, বেতবাড়িয়া, ধোপাখোলা ও উজিরপুরে সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এসব এলাকায় সড়ক ছোটবড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। প্রায় একই অবস্থা কলোড়া, বীরগ্রাম, গোবরা, আগদিয়া, বরকুলা, আড়পাড়া, মির্জাপুর ও চাকই এলাকায়। সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের মির্জাপুর থেকে রুখালী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এবং চাকই থেকে শুভরাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার মোটামুটি চলাচলযোগ্য। বাকি ২৩ কিলোমিটার সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোটবড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এত যানবাহনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। দুর্ঘটনা এড়াতে চলছে ধীরগতিতে। তবুও কোনক্রমেই থামছেনা দুর্ঘটনার আশংকা। প্রতিনিয়ত ছোটবড় প্রায়ই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। এতে করে সড়কে ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহনগুলোও। সম্প্রতি বুধবার (৭ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় নড়াইল সদর উপজেলাধীন নড়াইল-নওয়াপড়া-ফুলতলা সড়কের আগদিয়া চৌরাস্তার ২০০ গজ সামনে একটি নসিমন উল্টে রাস্তার পার্শে¦র ডোবায় পড়ে যায়। এছাড়াও গতকাল রাত ৮টার দিকে একই স্থানে একটি মোটরসাইকেলও অনুরূপভাবে পড়ে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা মারাত্মকভাবে আহত হয়। গোবরা বাসস্ট্যান্ডের সময় নিয়ন্ত্রক বলেন, নড়াইল থেকে গোবরা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কে বাস পার হতে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা, সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। বাস, মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান গর্তে পড়ে গেলে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না। সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। সড়কটির পাঁচ কিলোমিটার অংশ মোটামুটি ভালো। অন্য ২৩ কিলোমিটার খুবই খারাপ। এই ২৮ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ১০ বছর সংস্কার হয় না। চার-পাঁচ বছর ফাইল চালাচালি হচ্ছে। সম্প্রতি যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তা এসেছিলেন। এবার সড়কটি সংস্কারের জন্য ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে ভৈরব নদের সিকিরহাটে ফেরি চালু হবে। #