নড়াইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় কর্তৃক মাদকবিরোধী গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত

0
306

 

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় কর্তৃক মাদকবিরোধী গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) নড়াইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় কর্তৃক নড়াইলের সদর উপজেলাধীন লস্করপুর সীমাখালী দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচির আওতায় গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ, উপ-পরিদর্শক অপূর্ব বিশ্বাস, সিপাই দীপঙ্কর ম-ল ও মহিবুল ইসলাম, মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ আকমল হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক জনাব আমিনুর রহমান, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক জনাব ওসমান গনি, শিক্ষক জনাব আনিসুর রহমান, প্রশান্ত কুমার মল্লিক, মোসাম্মৎ ফাতেমা খাতুন, নাজনীন আক্তার, ইয়াসমীন নাহার ও মহসীন আলম প্রমুখ। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। মাদ্রাসার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক জনাব ওসমান গনি -এর সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত-এর মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের শুভ সূচনা হয়। স্বাগত বক্তব্যে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তত্ত্বাবধায়ক আমিনুর রহমান বলেন, সামাজিক উদাসীনতা ও ধর্মীয় জীবনাদর্শ না থাকায় ধীরে ধীরে আমরা সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। আমাদের যুবসমাজকে বাঁচাতে হলে, এ প্রকার গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এ প্রকার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নড়াইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ বলেন, মাদকদ্রব্য গ্রহণ করলে শরীর ও মনে বিষক্রিয়ার মতো হয়, তা মানুষের স্বাভাবিক আচরণকে খিটখিটে করে তোলে। মুখে গন্ধ হয়, নানা প্রকার অসুখবিসুখে মানুষ তার কর্মক্ষমতা হারায়। তোমরা তোমাদের স্মৃতিক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে। বন্ধুবান্ধব ও পরিবার পরিজনের সাথে হাসিআনন্দের সময় কাটাতে ভালো লাগবে না। তোমরা কি এমন জীবন চাও? ইসলাম ধর্মে মাদকদ্রব্য সম্পূর্ণ হারাম। তোমরা ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিশ্চয়ই মাদক থেকে দূরে থাকবে, আমরা এটাই প্রত্যাশা করি। মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা ফ্যাশন নয়, বরং অসম্মানের। তোমরা নিশ্চয়ই মদ ও মাদকদ্রব্যকে সর্বদাই পরিত্যাগ করবে। সকল ছাত্রছাত্রীকে মাদকবিরোধী শপথবাক্য পাঠ করানো হয় এবং শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ আকমল হোসেন-এর হাতে মাদকদ্রব্যের ক্ষতি বিষয়ক বাধাই পোস্টার ও মাদকবিরোধী শ্লোগান সম্বলিত মগ তুলে দেয়া হয় এবং ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মাদকবিরোধী লিফলেট বিলি করা হয়। মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ আকমল হোসেন তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, সিগারেটই মাদকের দরজা। সিগারেট দিয়েই নেশার শুরু। তোমরা কখনোই তাই সিগারেটের ধারে কাছে যেয়োনা। তাছাড়া, মাদকদ্রব্য শয়তানের পানীয়। তা সেবনে আমাদের জীবনে কলহ নেমে আসে। সুতরাং মাদক অবশ্যই পরিত্যাজ্য। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের এ প্রকার শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচি তাঁর প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আয়োজন করার অনুরোধসহ ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদ্যলেয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মোসাম্মৎ মাবিয়া খাতুন প্রশ্ন তোলে, সিগারেট কোম্পানিগুলো বন্ধ করা যায় না? মাদক তৈরি করার কারখানাগুলো বন্ধ করা যায় না? পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ জবাবে বলেন, নিশ্চয়ই সিগারেট এবং মাদক উৎপাদনের কারখানাগুলি বন্ধ করা যায়। তাতে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সমস্যাও আছে, তোমরা বয়সে ছোট বলে এখনো অতোটা বুঝবে না। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ঔষধ প্রস্তুতিতে মদ এবং নানা ধরণের মাদকদ্রব্য ব্যবহার করতে হয়। সবগুলো মাদকই এক একটা ঔষধ। পরিমিত মাত্রার বেশি গ্রহণ করার ফলেই নেশার বস্তু বা মাদকদ্রব্য হিসেবে বিবেচিত হয়। আর একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমরা যেমন লোভের বশেও শুকরের মাংশ খাই না, তেমনি মাদকদ্রব্যও আমাদের কাছে শুকরের মাংসের মতোই ঘৃণার বস্তু! তোমরা না খেলেই হলো। তোমরা সতর্ক থেকো, অসৎসঙ্গ থেকে দূরে থেকো। তাছাড়া, আমরা তোমাদের জন্যই দেশময় পাহারা দিচ্ছি।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here