নড়াইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃক সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচি

0
239

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, নড়াইল কর্তৃক নড়াইল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচির আওতায় গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।সোমবার (২ এপ্রিল) নড়াইল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব মোঃ ঈদ্রিস আহম্মদ-এর সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের শুভ সূচনা হয়। বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্রদের মাদকদ্রব্য সম্পর্কে মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে ছাত্রদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করে আলোচনা শুরু হয়। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সানজিদ হোসেন পরাগ ও আশিক তাদের মতামত ব্যক্ত করে বলেছে, তারা পরিবারে বাবামায়ের কাছে মন খুলে গল্প করার সময় পায়না, শুধু পড়া আর পড়া এরকম চাপে তারা দিশেহারা। মাঝে মাঝে নিজেদের খুব একা লাগে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব মোঃ ইদ্রিস আহম্মদ বলেন, আমাদের উঠতি বয়সের ছেলেদের মধ্যে দিনে দিনে মাদকের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। কারণ, পরিবারে আনন্দঘন পরিবেশ নাই। বিনোদনের ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে। খেলাধুলার পরিবেশ নেই। বাবা-মা সবসময় ব্যস্ত থাকেন। মন খুলে তারা অনেক সময় তাদের সুখদুঃখের কথাও বলতে পারে না। মনের ভেতর এক ধরণের হাহাকার কাজ করে। এ কারণে অনেকসময়ই বিচারবিবেচনা ছাড়াই তারা যাকে কাছে পায় তাকেই বন্ধু ভেবে মিশতে শুরু করে। তাই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমাদের পরিবার থেকেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার, বিদ্যালয়ে পড়ালেখার সাথে সাথে খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতামূলক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড অব্যাহত দরকার। জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের পরিদর্শক জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাখ, সহকারী উপপরিদর্শক জনাব গোলাম মোস্তফা, সিপাই দীপঙ্কর মন্ডল ও মহিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন মোল্যা (বাগডাঙ্গা), দৈনিক ভোরের বাংলা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন শেখ,একই পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান শাওন, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের পরিদর্শক জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাগ বলেন, মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে মানুষ অস্বাভাবিক আচরণ করে, খিটখিটে মেজাজ, আক্রমনাত্মক মানসিকতা সম্পন্ন হয়। সে কারণে মাদকসেবনকারীকে সাধারণ মানুষ ভালোবাসতে পারে না। এছাড়াও মাদক সেবন করতে শুরু করলে অকারণে মিথ্যা বলা, বানিয়ে গল্প বলা, অমনযোগী ও ছটফটে প্রবণতা দেখা যায়। ছাত্রছাত্রীরা পড়া মনে রাখতে পারেনা। সুতরাং মাদক সেবন ছাত্রছাত্রী বা উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত পুরোটাই ধ্বংস করে দেয়। আর মাদকের দরোজা হলো সিগারেট। সিগারেটের মাধ্যমেই অপরাপর মাদকদ্রব্য গ্রহণের দরোজা খোলে। সুতরাং পরিবারে, সমাজে এবং বিদ্যালয়ে সকলের আদর পেতে চাইলে সিগারেট এবং সকল প্রকার মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে। সৃষ্টিকর্তা সকল ধর্মেই মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ, হারাম করেছেন। সুতরাং, কোনো অবস্থাতেই মাদকদ্রব্য সেবন তো দূরের কথা, মাদক সেবনকারীকেও কাছে ঘেসতে দিওনা। বড় হতে চাইলে মাদক থেকে শত হাত দূরে থাকো। অতঃপর সকল ছাত্রছাত্রীকে মাদকবিরোধী শপথবাক্য পাঠ করানো হয় এবং শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের হাতে মাদকদ্রব্যের ক্ষতি বিষয়ক বাধাই পোস্টার ও মাদকবিরোধী শ্লোগান সম্বলিত মগ তুলে দেয়া হয় এবং ছাত্রদের মাঝে মাদকবিরোধী লিফলেট বিলি করা হয়। মাদকবিরোধী শ্লোগান সম্বলিত মগ তুলে দেয়া হয়। শেষে, জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাথ ছাত্রীদের উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন।
খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here