নড়াইলে পাটের আঁশ ছাড়ানোর মৌসুমি কাজে যুক্ত সাড়ে ২৮ হাজার নারী শ্রমিক

0
436

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে পাটের আঁশ ছাড়ানোর মৌসুমি কাজে যুক্ত হয়েছে নারীরা প্রতি বছরের মতো এবারো। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে পাট উৎপাদনে নড়াইলের অবস্থান অন্যতম। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই এখানে পাটের আবাদ বেশ ভালো হয়। জেলায় অসংখ্য খাল-বিল ও জলাশয় থাকায় পাট পচাতেও সমস্যা হয় না। এ বছর এরই মধ্যে পুরোদমে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবর— চার মাস এ কাজে পুরুষের পাশপাশি যুক্ত থাকবে নারীরাও।
এ বছর আঁশ ছাড়ানোর কাজে যুক্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৪৫০ জন নারী শ্রমিক। যারা প্রতিদিন ৫-৬ ঘণ্টা কাজ করে ২০০-৩৫০ টাকা আয় করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে পাট উৎপাদনে নড়াইলের অবস্থান অন্যতম। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই এখানে পাটের আবাদ বেশ ভালো হয়। জেলায় অসংখ্য খাল-বিল ও জলাশয় থাকায় পাট পচাতেও সমস্যা হয় না। এ বছর এরই মধ্যে পুরোদমে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবর— চার মাস এ কাজে পুরুষের পাশপাশি যুক্ত থাকবে নারীরাও।
সদরের মাছিমদিয়া গ্রামের কৃষকরা জানান, ধোপাখোলা ও কাড়ার বিল এলাকায় প্রতি বছর কয়েকশ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়। রাস্তার দুই পাশের উন্মুক্ত জলাশয়ে জুলাই থেকে শুরু হয় পাট পচানো ও আঁশ ছাড়ানোর কাজ। কথা হলে বেশ কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, জলাশয় থেকে পাট তোলার পর তারা আঁশ ছাড়ান। ছাড়ানো আঁশ মালিকপক্ষ নিয়ে যায়। অনেকে নগদ মজুরি পান। অনেকে আবার আঁশ ছাড়িয়ে কাঠি নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন।
যারা নগদ অর্থ নেন, তারা ৩০-৪০টি পাটের ছাড়ানো আঁশ দিয়ে একটি আঁটি বাঁধেন। এ রকম এক কুড়ি বা ২০টি আঁটি বেঁধে পান ৩৫-৪০ টাকা। একজন নারী শ্রমিক দিনে পাঁচ-সাত কুড়ি আঁটি বাঁধতে পারেন।
কথা হলে দক্ষিণ নড়াইলের দীঘিরপাড় এলাকার আকলিমা বেগম আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, প্রতি বছরই তিনি এ কাজ করেন। এ বছরও প্রায় এক মাস আগে কাজ শুরু করেছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ করে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা আয় করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নড়াইল-মাগুরা সড়কের ময়নখোলা এলাকায় চিত্রা নদীর পাশে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন অর্ধশতাধিক নারী শ্রমিক। এ সময় কথা হলে ময়নখোলা গ্রামের নাজনিন খানম জানান, পাট থেকে ছাড়ানোর পর তিনি কৃষককে আঁশ দিয়ে দেন। এর বিনিময়ে তিনি পাটকাঠি নিয়ে আসেন। পরে এসব কাঠি জমিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। গত বছর তিনি কাঠি বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন। এর মধ্য দিয়ে বাড়তি আয়ে তার পরিবারে সচ্ছলতা আসছে। শুধু এ স্থানেই নয়। নড়াইল-গোবরা সড়কের পাশেও প্রতি বছর আঁশ ছাড়ানোর কাজে যুক্ত হন অন্তত ৫০০ নারী শ্রমিক।
কথা হলে নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক চিন্ময় রায় আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, এ বছর জেলায় ১৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। জেলায় এবার ২৮ হাজার ৪৫০ জন নারী শ্রমিক পাট ছাড়ানোর কাজে অংশ নিয়েছেন। পাটের উৎপাদন বেশি হলে গ্রামের এসব নারীর মৌসুমি আয় আরো বাড়বে।
তবে এ কাজে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা জানতে চাইলে সিভিল সার্জন আসাদুজ্জামান মুন্সি আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান,‘পাট পচানোর পর এক ধরনের গন্ধ বের হয়। তবে এ কাজে নিয়োজিত নারীদের ভয়ের কারণ নেই। এ গন্ধে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিছু নেই।’ তবে যারা প্রতিদিন এ কাজ করেন, তাদের মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here