নড়াইলে কৃষকের চাষযোগ্য জমি দখলের প্রতিবাদে জমির মালিকদের মানববন্ধন

0
525

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি, নড়াইলের সদর উপজেলার তুলারামপুর মৌজায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ আরো অনেকের চাষাবাদের জমি দখল করে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করার জন্য প্লাগ পোতা হয়েছে। কৃষি জমি দখল করে পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করার প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্তরা নড়াইল জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। শুক্রবার (১৬ মার্চ) সকালে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের আয়োজনে মানববন্ধন করেন তাদের পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুরা। এ সময় বক্তব্য রাখেন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরফদার মোশারেফ হোসেন, চাষী জহুরুল হক সিকদার, হান্নু তরফদার, উজির মোল্যা, আতিয়ার রহমান, ইয়ার আলী সিকদার, রতন বিশ্বাস, বিবেক বিশ্বাস, রিফল বিশ্বাস, রমেন বিশ্বাস, রুবিয়া বেগমসহ আরো অনেকে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের ২ একর কৃষি জমির উপর হাইওয়ে পুলিশ জোর করে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির পায়তারা করছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাননি। বিষয়টির দ্রুত সমাধান না হলে আদালতে মামলা করবেন বলেও জানান ক্ষতিগ্রস্থরা। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরফদার মোশারেফ হোসেন অভিযোগ করে জানান, তার নিজস্ব চাষাবাদের জমি দখল করে তাদের কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়ে পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ সকল জমির বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে। কৃষক রতন বিশ্বাস জানান, অনেক বছর যাবৎ তারা এই জমিতে কৃষিকাজ করেন। ২ একর জমিতে পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হলে অন্তত ২৫টি কৃষি পরিবার তাদের সকল সম্পত্তি হারিয়ে পথে বসবে। কৃষক রমেন বিশ্বাস জানান, যে জমিতে পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে এগুলো কৃষিজমি এবং প্রত্যেকটি জমিতে ফসল রয়েছে। এসকল জমিতে তার চোখের সামনে অন্তত ৫০ বছর ধরে কৃষিকাজ করা হচ্ছে। এই জমিতে পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হলে এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কারণ এ সকল জমির আইল দিয়ে সারা বিলের ফসল আনা-নেওয়া করা হয়। কৃষক বিবেক বিশ্বাসের অভিযোগ, তুলারামপুর মৌজায় তাদের নিজস্ব কৃষি জমিতে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া তাদের রেকর্ডীয় জমিতে এই পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবি এই প্রান্তিক কৃষকের। কৃষক ইয়ার আলী সিকদারের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও তারা কোন প্রতিকার পাননি। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা করবেন বলেও জানান ক্ষতিগ্রস্থরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, কৃষি জমি জোর দখল করে সরকারি কোনো স্থাপনা করার কোন বিধান নেই। বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করবেন বলে জানান এই কৃষিবিদ। এ ব্যাপারে মাদারীপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার মুঠোফোনে জানান, আমি সদ্য এই হাইওয়েতে যোগদান করেছি। আমি এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে অবগত নই। তবে আমি জমি দখলের জন্য কোনো নির্দেশ দেয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য যে, কৃষক রুবিয়া বেগমের বসতবাড়ি এবং চাষের জমিও এই দখলের আওতাভুক্ত রয়েছে। এই জমিতে পুলিশ ফাঁড়ি হলে তাকে স্বামী সন্তান নিয়ে পথে বসতে হবে ভেবে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এছাড়াও তার বাড়ির উপর দিয়েই সকল জমির ফসল আনা-নেওয়া হয় বলে তিনি জানান। কিন্তু বাড়িটাই যদি অন্যের দখলে চলে যায় তাহলে কৃষকদের ফসল আনা-নেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হবে। ##

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here