নড়াইলে এসপির নির্দেশে ধর্ষকদের গ্রেফতারে নির্ঘুম রাত পার করছেন সদর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন

0
487

বুলু দাস,নড়াইল সদর প্রতিনিধি: নড়াইলে সম্প্রতি একটি ধর্ষণকান্ডের খবর দৈনিক যশোর, দৈনিক মাতৃছায়া, দৈনিক সমাজের কাগজসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের পর টনক নড়েছে পুলিশের। এ কারণে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম নিজেই খোঁজ-খবর নিচ্ছেন মামলাটির। মামলাটিকে টপ প্রায়োরিটি দিয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেনকে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম। এ কারণে আসামিদের ধরতে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোটে, বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের নিকট একান্ত সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাকে জানান, সম্প্রতি নড়াইল সদর উপজেলাধীন হবখালী গ্রামে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় ধর্ষিতার পরিবারের পক্ষ থেকে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়েরের পর মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আমি ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সাথে দেখা করেছি। তাদেরকে নড়াইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ অভয় প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের লক্ষ্যে নড়াইল পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা রাখি খুব দ্রুতই এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে অচিরেই গ্রেফতার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সক্ষম হবো। উল্লেখ্য যে, নড়াইল সদরের হবখালী ইউনিয়নের সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বুধবার (২০ জুন) দুপুরে তিনজনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নড়াইল সদরের ডাঙ্গাসিঙ্গীয়া গ্রামের ভূক্তভোগী মেয়েটিকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলার আসামিরা হলো-সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামের আজাদ মিনার ছেলে রফিকুল মিনা (৩০), হালিম মিনার ছেলে শাহজালাল মিনা (২৩) এবং আজগর মিনার ছেলে মাসুম মিনা (২৫)। এদিকে বুধবার দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভূক্তভোগী মেয়েটি নড়াইলের ব্রাক্ষণীনগর গ্রামে নানাবাড়িতে থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। মামলার বিবরণে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে যশোর থেকে নড়াইলে আসছিলো অষ্টম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে নড়াইলের হবখালী আদর্শ কলেজ এলাকায় অটোবাইক থেকে নেমে যায় তারা। রাত ৯টার দিকে মাসুমের দোকানের কাছে পৌঁছালে ৮-৯ জন লোক তাদের (প্রেমিক-প্রেমিকা) পথরোধ করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নেয়ার কথা বলে তাদের হবখালী বাজারের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এলাকার কয়েকজন যুবক। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত রফিকুল মিনা, শাহজালাল মিনা ও মাসুম মিনা হবখালী কলেজ এলাকায় প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে পাটক্ষেতে নিয়ে প্রেমিকা গণধর্ষণ করে এবং বুক, মুখ ও হাতের বিভিন্ন অংশে জখম করে। গণধর্ষণের পর আসামিরা হুমকি দেয়-বিষয়টি কাউকে জানালে তারা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণের পর মেয়েটি অসুস্থ হলে পড়লে অভিযুক্ত যুবকেরা তাকে (মেয়েটি) ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়। রাত ১২টার দিকে প্রেমিকসহ স্থানীয় তিনজন ভূক্তভোগী মেয়েটিকে উদ্ধার করে সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে শাকিলের বাড়িতে নিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলেন। ওই রাতেই শাকিলের বাড়িতে স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হয়ে ভূক্তভোগী মেয়েটির পাশে দাঁড়ান। পরে পুলিশ এসে প্রেমিক-প্রেমিকা উদ্ধার করে নড়াইল সদর থানায় নিয়ে আসে। দ্রুত গ্রেফতারসহ যথাযথ বিচার দাবি করেছেন। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের নিকট একান্ত সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাকে জানান, ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যধি। ধর্ষণের সাথে জড়িতদের কোনো ছাড় নেই। সেই সাথে ধর্ষিতার পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও আমাদের। এ কারণে আমরা মামলাটিকে টপ প্রায়োরিটি দিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা রাখি এ ঘটনার সাথে জড়িতরা দ্রুত আইনের আওতায় চলে আসবে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here