নড়াইলে ঈদে সরকারি বরাদ্দকৃত চাল বিতরন, ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ

0
715

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে ঈদের ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান বললেন চাল তো আর সোনার দাড়িতে মাপা হয়না নড়াইলে পবিত্র ঈদে হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে নানা ধরনের অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোটে, জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মতো নড়াইলের চাচুড়ি ইউনিয়নে ঈদের ভিজিএফ চাল বিতরণে নানা অনিয়মের খবর মিলেছে। মাথাপিছু ১০ কেজি করে দেবার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে ৬ থেকে ৮ কেজি করে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণকৃত চালের ওজন বাইরে মেপে সঠিক চালের পরিমান জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ সাধারণ হতদরিদ্র মানুষ।
চালের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় দিনের সব কাজ বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ১০ কেজি সরকারি চাল নিতে এসেছিলেন চাচুড়ী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক আফসার বিশ্বাস। চালের পরিমানে সন্দেহ হলে নড়াইলের চাচুড়ী বাজারের একটি দোকানে এসে মেপে দেখেন চাল পেয়েছেন সাড়ে সাত কেজি। মনের কষ্টে বোঝাটা মাথায় নিয়েই বাড়ির পথে রওনা হন তিনি। চাল কম দিয়েছে এই খবর পেয়ে কৃষ্ণপুরের মালেক বিশ্বাস, হনুফা, ডহর চাচুড়ী গ্রামের আবুল হাসান সহ প্রায় ২০ জন চাল মেপে দেখেন প্রত্যেকেই পেয়েছেন সাড়ে সাত কেজি থেকে ৮কেজি পর্যন্ত। রাগে-দুঃখে গজগজ করলেও তাদের কিছুই করার নেই। গ্রামের রিকায়েত রেগে গিয়ে বলেন, চাল দেবার কথা ১০ কেজি কিন্তু আমাদের চেয়ারম্যান ৮কেজি করে দিয়ে দুই কেজি চুরি করছেন। তাৎক্ষনিকভাবে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকে, তবু না পাবার ভয়ে আবার কম চাল নিয়েই বাড়ি ফিরছেন তারা। ঈদের আগে গত ১৩ জুন বুধবার
স্থানীয় চাচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আশরাফুল ইসলাম আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, গরীব মানুষের জন্য সরকারী সাহায্য কম দেয়া মারাতœক অপরাধ, আমি শুনেছি ৬/৭ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে, আমরা এ ধরনের ঘটনাকে ধিক্কার জানাই। সরকারী সহায়তা লুটপাটের কোন সুযোগ নাই।
খোজ নিয়ে জানা গেছে ভিজিএফ (অতিদ্ররিদ্র তহবীল) এর আওতায় ঈদ উপলক্ষে চাচুড়ী ইউনিয়নে ৭’শ ৮৬ জনকে দেবার জন্য ৮ টন চাল বরাদ্দ পায় চাচুড়ী ইউনিয়ন। একটি বালতি ভরে তাতে চাল উঠিয়ে কোনরকমে ঢেলে দিচ্ছেন গরীব মানুষের ব্যাগে। বালতিতে চালের পরিমান মেপে ৯ কেজির বেশি হলো না।
চাচুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সচিব জাহাঙ্গীর আলম জানালেন আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, চেয়ারম্যান আর মেম্বররা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েই ৮ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। পরিবহণসহ নানা ধরনের খরচপাতি থাকে সেই অযুহাতে চাল কম দেয়া হতে পারে। এতে নিয়মের বরখেলাপ হলেও উনাদের সিদ্ধান্তের পরে আমাদের কিছুই করার থাকে না।
চাচুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম টগর চাল কম দেবার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, হয়ত মাপের সময় আধাকেজি কম হতে পারে, চাল তো আর সোনার দাড়িতে মাপা হয়না। অভিযোগ আছে দেড়টন চাল আনার সময় কালিয়াতে বিক্রি করা হয়েছে এমন প্রশ্ন তিনি অস্বীকার করেন।
সরকারী এসব চাল বিতরনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক নিযুক্ত ট্যাগ অফিসার এর উপস্থিতিতে চাল বিতরন করার কথা থাকলেও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ উপস্থিত না হয়েই ইউপি সচিবকে চাল বিতরনের জন্য ফোনে জানিয়ে দেন। এ ব্যাপারে ট্যাগ অফিসার রাজু আহম্মেদ আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, আমার শরীর অসুস্থ্য থাকায় সেখানে যেতে পারিনি।
চাল পরিমানে কম দেয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুদা আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বন্ধের দিন চাল বিতরনের জন্য নিষেধ করা সত্তেও তারা (নড়াইল চাচুড়ী ইউপি) এটা কেন করলো এটা আমার বোধগম্য নয়। পরিমানে কম দেবার কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here