নড়াইলের পাট জাগ, দেশী প্রজাতির মাছ মরে ভাসছে ,তীরবর্তী লোকজন চুলকানি পাঁচড়ায় আক্রান্ত

0
311

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর ২৫ কিলোমিটার অংশ জুড়ে পাট জাগ ,দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ আধমরা অবস্থায় ভেসে উঠছে ‘চোখ ওঠা’ এবং ‘চুলকানি পাঁচড়ায়’ আক্রান্ত, জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীতে পাট জাগ দেওয়ার ফলে নদীর পানি পচে দুর্গন্ধময় হয়ে পড়েছে। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, স্বচ্ছ, টলটলে নবগঙ্গা নদীর পানি পচে নিকষ কালো বর্ণ ধারন করেছে। ফলে, নদী তীরবর্তী এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। পানি পচে যাওয়ায় দেশীয় প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠছে। শুধু তাই নয়, নদীর পানি পচে যাওয়ায় ‘চোখ ওঠা’ এবং ‘চুলকানি’ সহ চর্ম জাতীয় রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, এক সময় লোহাগড়ার পাট চাষিরা খাল-বিল, ডোবা নালায় পাট জাগ দিতো। সে সময় চাষীদের পাট জাগ দেওয়ার জন্য আর যাই হোক, নদীতে আসতে হতো না। কিন্তু সাম্প্রতিক বছর গুলোতে সময় মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল-বিল, ডোবা-নালায় পানি থাকে না। ফলে, পাট চাষীরা বাধ্য হয়েই নবগঙ্গা নদীতে পাট জাগ দিয়ে আসছেন। নদীতে পাট জাগ দেওয়ার কারনে পানি দূষিত হয়ে তা ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর লোহাগড়ায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২৩৫০ হেক্টর জমিতে আর চাষ হয়েছে ১১২৬০ হেক্টর জমিতে। চাষের পর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এ অঞ্চলে এ বছর পাটের আবাদ ভালো হয় নাই। এ অঞ্চলের পাট চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাট চাষীরা জমির কাটা পাট নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন। অনেক চাষী পানির অভাবে জমি থেকে পাট কাটছেন না। ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ার দরুন খাল-বিল, ডোবা-নালায় পানি নেই বললেই চলে। অধিকাংশ পাট চাষীরা তাই বাধ্য হয়েই নবগঙ্গা নদীতে পাট জাগ দিতে বাধ্য হয়েছেন। নবগঙ্গা নদীর ২৫ কিলোমিটার অংশ জুড়ে পাট জাগ দেওয়া হয়েছে। নলদী ত্রি মোহনা থেকে লুটিয়া এলাকা পর্যন্ত নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। নদীতে পাট জাগ দেওয়ার ফলে এ বছরও নদীর পানি পচে দুর্গন্ধময় হয়ে পড়েছে। নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারনে নদী তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ নদীর পানি ব্যবহার করছেন না। অপর দিকে, নদীর পানি পচে দূষিত হওয়ার কারনে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ আধমরা অবস্থায় ভেসে উঠছে। এ দিকে নদীতে পাট জাগ দেওয়ার ফলে নদী তীরবর্তী লোকজন ‘চোখ ওঠা’ এবং ‘চুলকানি পাঁচড়ায়’ আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সব রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসছেন। নবগঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেতা, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, কৃষকের অসচেনতা এবং কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় নবগঙ্গা আজ দূষণের কবলে পড়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। দূষণরোধে এলাকাবাসীদের সচেতন হতে হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here