আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট ॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের ৩টি সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে ২৬ জন প্রার্থী নিজ দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করেছেন।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের ৩টি সংসদীয় আসন নিজেদের কজ্বায় নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এরই মাঝে নিজ নিজ দলীয় মনোনয়ন নিতে সকল নেতারা দলবল নিয়ে রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছু নিয়েছেন। সকল রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করায় বর্তমানে নেতা শুন্য হয়ে পড়েছে লালমনিরহাট জেলা। ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগের নৌকার মাঝি হতে ৩টি আসনেই একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন
। বিএনপি’তে ইউপি চেয়ারম্যান থেকে সাবেক সংসদ পর্যন্ত একাধিক ব্যক্তি একই আসনের মনোনয়ন কিনেছেন। মনোনয়নে চুড়ান্ত টিকিট পেতে শেষ মুহুর্তে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন তারা। তাই সকলের অবস্থান এখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
বিভিন্ন দলীয় সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে মনোনয়ন কেনার তালিকায় রয়েছেন, লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসন, আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ৫জন। এরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য আবু সালেহ মোঃ সাঈদ দুলাল, তার ছেলে ড. তানভির ফেরদৌস অনিন্দ্য, বর্তমান সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন।
এ আসনে বিএনপি’র এখন পর্যন্ত একমাত্র মনোনয়ন কিনেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক-উপমন্ত্রী ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ২ জন। এরা হলেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রতিদ্বন্দি হয়ে জাপা’র মনোনয়ন কিনেছেন জেলা জাপা’র সাবেক সদস্য সচিব (অব্যহতি প্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম মিঠু।
এবারও মশাল প্রতীক নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন কিনেছেন জেলা জাসদের সভাপতি খোরশেদ আলম। গত সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জাসদ থেকে বর্তমান এমপি আবু সালেহ মোঃ সাঈদ দুলালের একমাত্র প্রতিদ্বন্দি ছিলেন তিনি।
লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ), আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ৪জন। এরা হলেন, সমাজ কল্যান প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ, এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক সিরাজুল হক, জেলা পরিষদের সদস্য সেলিম হায়দার ও উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যার পদে পরাজিত এমদাদুল হক।
বিএনপি’র থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ৩জন। এরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি সালেহ উদ্দিন আহমেদ হেলাল, চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, জিয়া পরিষদের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বোরোবি’র শিক্ষক ড. রোকনুজ্জামান।
এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির একমাত্র মনোনয়ন কিনেছেন ১জন। তিনি হলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ কল্যান সম্পাদক রোকন উদ্দিন বাবুল।
লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম), আসনে নৌকার মাঝি হতে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন কিনেছেন ৩জন। এরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মকবুল হোসেন।
এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ৫জন। এরা হলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, কেন্দ্রীয় আইনজীবী দলের যুগ্ন সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম পাটোয়ারী উজ্জল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ন সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আকন্দ, হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মোশারফ হোসেন ও উপজেলা যুবদলের সম্পাদক হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান সেলিম। জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে একমাত্র মনোনয়নটি কিনেছেন জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মেজর (অবঃ) খালেদ আখতার।
লালমনিরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু গত ১০ বছরে আ’লীগের শাসন আমলে লালমনিরহাট জেলার রেকর্ড পরিমান উন্নয়ন হয়েছে, তাই কেন্দ্র থেকে এই জেলার ৩টি আসনে যাকেই নৌকার মাঝির দায়িত্ব দেয়া হোক না কেন তিনি বিপুল ভোটে জয়লাব করবেন।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়শ্রী রানী রায় বলেন, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত লালমনিরহাটের ৩টি আসনে বিভিন্ন দলের মোট ২৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছেন। যেহেতু হাতে সময় আছে তাই এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
খবর৭১/ইঃ
