খবর৭১ঃ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় বাংলাদেশ।
এমন নিষ্ঠুর, বর্বর, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার করতে দাবি জানাচ্ছে দেশবাসী।
বিশেষকরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি সিরাজউদ্দৌলা ও তার সহযোগীদের দ্রুত বিচার চেয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন অনেকে।
এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ।
মূল আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ও জড়িতদের কঠিন বিচার না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে নিজের ফেসবুক ওয়ালে কবি লিখেছেন, ‘রাফির ধর্ষক সিরাজ ও সিরাজকে বাঁচাতে রাফিকে যারা পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কঠিন বিচার হবে। না হলে আমি আমৃত্যু অনশনে বসবো।’
এ মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা সাত দিনের রিমান্ডে আছেন। এ ছাড়া ওই মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন এবং নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নুর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, নুসরাতের সহপাঠী ও মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি ও আরেক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনও পলাতক রয়েছেন সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের ওই মাদ্রাসার ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম ও হাফেজ আবদুল কাদের।
শুক্রবার সকালে গ্রেফতার হয়েছেন এ মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন।
এছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, পৌর কাউন্সিলর মোকসুদ আলম।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হয়েছেন মামলার আরেক আসামী জাবেদ আহম্মদ।
বৃহস্পতিবার রাতে জাবেদ আহম্মদকে গ্রেফতারের তথ্যটি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মনিরুজ্জামান।
প্রসঙ্গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর ওই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা।
শনিবার সকালে সোনাগাজী পৌর এলাকার ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রী ওই মাদ্রাসা থেকেই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে কয়েকজন বোরকাপরা নারী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা।
তারা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলা তুলে না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।