নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী ‘ধার্মিক’ হয়ে যান: রিজভী

0
303

খবর৭১: নির্বাচনের সময় অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ধার্মিক হয়ে যান এমন মন্তব্য করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,
গতকাল (রবিবার) প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরের এক জনসভায় বলেছেন- নুহ নবীর সময় এই নৌকা সবাইকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছিল। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, এটা সকলেই জানে-নির্বাচনের সময় আপনি ধার্মিক হয়ে যান। হেফাজতের রক্তাক্ত ঘটনার কথা মানুষ এখনও ভুলে যায়নি। সরকারি ফরমান জারি করে জুম্মার নামাজে মসজিদে মসজিদে খুৎবা পরিবর্তন করা হয়েছে। দাড়ি-টুপি দেখলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে মসজিদে মসজিদে ঢুকে নামাজরত বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’

সোমবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘মসজিদের ইমাম সাহেবদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আওয়ামী চেতনায় মোনাজাত করতে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বিরোধীদলীয় কেউ যদি মারা যায় বা মৃত কারো নামে দোয়া চাওয়া হয়, তাহলে ইমাম সাহেবদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। অথচ সেই প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় কাহিনী বলে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘ম্যাকিয়াভেলী ঠিকই বলেছেন-শাসক (প্রিন্স) এর বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে ‘ধর্ম, ধাপ্পা ও বলপ্রয়োগ’। আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এই তিনটি বৈশিষ্ট্য খুব যোগ্যতার সাথেই আয়ত্বে নিয়েছেন। ধার্মিক না হয়েও দেশ শাসনে ধর্মের ব্যবহার করা, ধাপ্পাবাজি দিয়ে মানুষের মন জয় করতে বিভ্রান্ত করা, আর তা না হলে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের বশ্যতা আদায় করা-ম্যাকিয়াভেলীর এই চাতুর্যগুলো প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি ও দেশশাসনের নীতি।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে মিথ্যা সাজানো মামলায় বন্দী করে রেখেছেন তেমনি বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে শেখ হাসিনা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিএনপির বিরুদ্ধে ডাহা মিথ্যাচার করছেন। তিনি নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে নৌকায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন, গতকালও চাঁদপুরে সরকারি টাকা ব্যয়ে জনসভা করে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন যা আইনের সুষ্পষ্ট লংঘন।’

তিনি বলেন, ‘গত দুদিন আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। দুটি নির্বাচনই দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। ফলে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের যে প্রান্তেই নৌকার পক্ষে ভোট চান না কেন তা ঘোষিত তফসিলের মধ্যে পড়ে। এবং সেটা নির্বাচন আচরণ বিধিমালার সুষ্পষ্ট লংঘন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বিনা ভোটের প্রধানমন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বন্দুকের নলই হচ্ছে তাঁর ক্ষমতার ভিত্তি, তাই তিনি সব কিছুই করতে চাচ্ছেন হুংকার আর ধমক দিয়ে। সকল আইন, নিয়মনীতি ভেঙে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।’

‘আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দশ্যে বলতে চাই-আপনি বলেছেন ভোট চাওয়া আপনার রাজনৈতিক অধিকার তাহলে দলের সভানেত্রী হিসেবে ভোট না চেয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোট চাচ্ছেন কেন? প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সরকারি টাকা খরচ করে, সরকারি হেলিকপ্টার নিয়ে সরকারি সার্কিট হাউস ব্যবহার করে এবং গন্তব্যস্থলে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে, সরকারি সকল প্রটোকল নিয়ে ভোট চাওয়া কোন ধরনের রাজনৈতিক অধিকার জনগণ তা জানতে চায়। এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, কিন্তু ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী আইন ভঙ্গের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ‘রিপভ্যান উইংকেল’ এর মতো দীর্ঘ নিদ্রায় শায়িত থাকে। যে প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় তাঁর মুখে ভোট চাওয়া জনগণের সাথে ইয়ার্কি-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়’ যোগ করেন রিজভী।

তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় এবং দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপি ঘোষিত প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here