নিন্মামানের উপকরণ দিয়ে তড়িঘড়ি করে তৈরি ঘর উদ্বোধন করলেন এমপি

0
298

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প – ২ এর আওতায় তিন শ’ ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে এখনও অর্ধশতাধিক ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়নি। অথচ ওই প্রকল্পের একটি ঘরে নির্মাণ কাজ রাতের আঁধারে নিন্মমানের উপকরণ ব্যবহার করে তড়িঘড়ি শেষ করা হয়। উপজেলার ৫ নম্বর খাতামধুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছইল মালিপাড়ার বাসিন্দা ধ্রুব চন্দ্র রায় নামে বরাদ্দকৃত ওই ঘর (শনিবার) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। নীলফামারী – ৪ সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. শওকত চৌধুরী ফিতা কেটে ওই ঘরের উদ্বোধন করেন। এ সময় সৈয়দপুর উপজেলায় আশ্রয়ণ -২ প্রকল্প উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ, নির্বাচন অফিসার মো. রবিউল আলম, খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট ইউপির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প – ২ এর অধীন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা ২০১৭ – ২০১৮ অর্থবছরে “যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণের জন্য তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। অ তিন শত ঘরের প্রতিটির জন্য এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। বরাদ্দকৃত এ অর্থে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ৬০ টি করে ঘর নির্মাণ কাজ গত জুলাই মাসে শুরু করা হয়। শুরু থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউএনও কমিটির অন্যান্য সদস্য পাশ কাটিয়ে নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহার করে ঘর নির্মাণ করছে। যদিও ঘর নির্মাণ কাজের মেয়াদ গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে। তাই সৈয়দপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৩ শ’ ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করতে তড়িঘড়ি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, নি¤œমানের উপকরণ সাগ্রী ব্যবহার করে একেকটি ঘর ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করা পায়তারা করছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সৈয়দপুর ইউএনও। এর পর রয়েছে সুবিধাভোগীদের খরচে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে থাকা আরসিসি পিলার নিয়ে আসা, ঘরে ভিটে উঁচু করে নেওয়া ও ল্যাট্টিনের গর্ত খনন প্রভূতি।
খাতামধুপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী মোছা. ছামছিয়া। তাঁর স্বামী মো. তৈয়ব। গত শুক্রবার সৈয়দপুর শহরে কথা হয় তৈয়ব এর সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করেন ঠিকাদারের লোকজন তাকে ঘরের ভিটায় মাটি তুলতে বলেন। তিনি প্রতি ট্রলি মাটি ৬ শ’ টাকা করে তিন হাজার টাকার মাটি কিনে ঘরের ভিটা উঁচু করেন। বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার উপকারভোগী মুজিবর রহমানকে ল্যাট্টিনের গর্ভ করতে বলেছেন ঠিকাদারের লোকজন। গতকাল (শনিবার) কথা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হামাক ঘর বানে (তৈরি করে) দেইছে। সরকার থাকি তো সব কাম (কাজ) করি দিবার কথা শুনছি। কিন্তু এখন হামাক কেন ল্যাট্টিনের খাইল (গর্ত) খুড়ির লাগবে ?
উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দিনাজপুরে বদলী হয়েছেন। গত জুলাই মাসে তার ওই বদলীর অর্ডার হলেও এখনও তিনি সৈয়দপুর থেকে বিদায় দেননি। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এখনও। তিনি চাইছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করে নিজের পকেট ভারী করে সৈয়দপুর থেকে বিদায় নিতে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here