খবর৭১ঃ দীর্ঘ ২৮ বছরের প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ঘটে যাওয়া নানা অনিয়মের অভিযোগের উত্তরে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ‘আমি বিব্রত।’ এসব ঘটনার জন্য হল প্রশাসনকে দায়ী করেন তিনি।
সোমবার (১১ মার্চ) বিকাল ৪টা ২৪ মিনিটে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন নির্বাচন বর্জন করা বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তারা নির্বাচনে অনিয়মের কথা উল্লেখ করে ভোটের ফলাফল ঘোষণা না করার দাবি জানান। জবাবে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি কিছু বলবো না। তোমাদের কথা শুনেছি।’
ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে ভোট বর্জনকারীরা প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যান। বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অভিযোগ জমা দেন। তারা ভোটের ফলাফল ঘোষণা না করার আহ্বান জানান তারা।
ভোট বর্জনকারী প্রার্থী ও কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে এস এম মাহফুজুর রহমানকে বলেন, ‘ছাত্রলীগকে জিতিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আপনারা নিয়ে থাকলে আমাদের কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করালেন।’
উপাচার্য কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে লিখিত অভিযোগে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী লিটন নন্দী, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এ আর এম আনিসুর রহমান, একই পদে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজির, স্বতন্ত্র জোটের সহ-সভাপতি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রাশেদ খান স্বাক্ষর করেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানে বাধা দান, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, কারচুপি, প্রার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা, ভোট বাক্স নিয়ে লুকোচুরি, ভোট দেয়ার পরও লাইনে দাঁড়িয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম হয়েছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনসহ অধিকাংশ প্রার্থীরাই নির্বাচন বর্জন করেছি।
লিখিত অভিযোগ দাখিলের পর অধ্যাপক ড. এস এস মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি ফলাফল স্থগিত করতে পারি না। এজন্য কমিটি আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত হবে। তবে যেখানে জালিয়াতি হয়েছে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কুয়েত মৈত্রী হলে সিল মারা ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রভোস্ট পরিবর্তন করে নতুন প্রভোস্টের নের্তৃত্বে নতুন করে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোকেয়া হলে ঝামেলা হয়েছে, সেখানে সাদা ব্যালট নিয়ে তুলকালাম হলেও জালিয়াতির প্রমাণ মেলেনি। তবুও ভোট বন্ধ থাকা ও ঝামেলার দায় হল প্রশাসনের। এর সবই তদন্ত করা হবে।’
খবর৭১/এসঃ