নলকূপ-ল্যাট্রিন পাচ্ছেন হাওরবাসী

0
398

খবর ৭১ঃ হাওড় অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সুবিধা দিতে ৫ হাজার ৬৬১টি গভীর নলকূপ ও ৪ হাজার ১২৬টি ইম্প্রুভ ল্যাট্রিন স্থাপন করা হবে। নলকূপ স্থাপন ব্যয় ৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে একটি নলকূপে এক লাখ টাকা খরচ পড়বে। অন্যদিকে ল্যাট্রিন স্থাপনে মোট ধরা হয়েছে ২০৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ফলে প্রতিটা সাধারণ মানের ল্যাট্রিন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা।

উত্তরবঙ্গে দেড়শ থেকে ২০০ ফুট গভীরতায় সুপেয় পানি পাওয়া যায় অন্যদিকে বরিশালে এক থেকে দেড় হাজার হাজার ফুট গভীরতায় সুপেয় পানি মেলে। তবে হাওর অঞ্চলের ৭০০ থেকে ৮০০ ফুট গভীরতায় মিলবে সুপেয় পানি।

হাওর অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বন্যাজনিত ক্ষয়ক্ষতি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জনস্বাস্থ্য নিম্নমানের। তাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যার অন্যতম কারণ হলো বিশুদ্ধ সুপেয় পানির অভাব এবং স্যানিটেশনের তীব্র সংকট। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ১০ ভাগ মানুষের নিরাপদ পানি সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই। হাওর মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ৫০ ভাগ গৃহস্থালী কাজের জন্য পার্শ্ববর্তী পুকুর বা নদীর উপর নির্ভর করতে হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (ডিপিএইচই) কাজগুলো বাস্তবায়ন করবে।

ডিপিএইচই সূত্র জানায়, সুপেয় পানির জন্য হাওর অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের উৎস রয়েছে। কিন্তু বন্যা অথবা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এসবের ৩০ ভাগ অকেজো হয়ে পড়ে। বর্তমানে হাওরে ৬০ হাজার ৪৮২টি উৎস চালু আছে। একটি চালু পানির উৎস থেকে ১১০ জন পানি সংগ্রহ করতে পারেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। এই সমস্যা নিরসনেই নলকূপ নির্মাণ করা হবে।

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় হাওরে স্যানিটেশন সংকট অন্যতম সমস্যা। বর্তমানে মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ স্যানিটেশন সুবিধার আওতায়। সুরকি, খোয়া অথবা শুধু ইট দিয়ে তৈরি ল্যাট্রিন। এ সমস্ত ল্যাট্রিন বছরে ৬ থেকে ৭ মাস পানিতে ডুবে থাকে। ফলে দ্রুত এসব ল্যাট্রিন অকেজো হয়ে পড়ে। বাকি জনগোষ্ঠী এই সুবিধা থেকেও বঞ্চিত।

এছাড়া বেশকিছু হাওর অঞ্চলে এখনও খোলা ও ঝুলন্ত ল্যাট্রিন রয়েছে যা সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর। বেশিরভাগ অঞ্চলে দরিদ্রতার কারণে ল্যাট্রিন নির্মাণ সম্ভব হয় না। এজন্য হাওরের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য ল্যাট্রিন নির্মাণ করে দেবে সরকার।

‘হাওর অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫৮০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩৪০ ইউনিয়নের ৩৭৩টি হাওড় অঞ্চলে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় সাধারণ মানের ২২ হাজার ৬৪২টি নলকূপ, ৪৫৮টি পিট (স্ল্যাব কূপ) ল্যাট্রিন, দুটি গাড়ি, ২৭টি মোটরসাইকেল ও দু’টি স্পিডবোট কেনা হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব খাইরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাওর অঞ্চলে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন অন্যতম সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দেশের সমস্ত হাওরে সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে নলকূপ স্থাপন করা হবে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হবে। এসবের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নত হবে। সামাজিক প্রচারণার মাধ্যমে হাওর অঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের বিষয়ে স্থানীয় জনগণের সচেতনতা বাড়ানো হবে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here