নরসিংদীতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে চলছে অপারেশন ‘গর্ডিয়ান নট’

0
244

খবর৭১ঃ
নরসিংদীর শেখেরচরের ভগীরথপুরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে কাপড় ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনের পাঁচতলা বাড়িতে সোয়াত টিমের অপারেশন ‘গর্ডিয়ান নট’ চলছে। বাড়িটির ভেতর থেকে দুপুর পৌনে ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও গুলি বিনিময়ের শব্দ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এলে সোয়াতের টিম এ অভিযান শুরু করে।

বাড়িটি থেকে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক দফায় দফায় গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী ঘটনাস্থলে যান। তখনও গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

আইজিপি সাংবাদিকদের বলেন, এখন অভিযান চলছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা যাবে না। অভিযান শেষে ব্রিফিং করা হবে।

এদিকে মাধবদী পৌরসভার গাংপাড় এলাকার আফজাল হাজীর ‘নিলুফা ভিলা’ নামে একটি ভবনও জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে অভিযান শেষে সেখানে অভিযান শুরু হবে বলে জানা গেছে। দুটি বাড়িতে নারী-পুরুষসহ অন্তত পাঁচ জঙ্গি রয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।

পুলিশ বাড়ি দুটির আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার পর ৫০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মাইকিং করে কাউকে বের না হতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও র‌্যাব সদস্যরা এলাকা দুটি ঘিরে রেখেছেন। দুই জায়গাতেই উপস্থিত হয়েছে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও চিকিৎসক দল।

মনিরুল ইসলাম সকালে নরসিংদীতে পৌঁছে সাংবাদিকদের বলেন, একাধিক জঙ্গি আছে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তাদের কাছে কি ধরনের অস্ত্র বা বিস্ফোরক থাকতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সোয়াত অভিযান চালাবে। তার আগে আমরা চেষ্টা করছি নেগোশিয়েট করার, যাতে তারা আত্মসমর্পণ করে। আশপাশের লোকজনের যাতে ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও পুলিশ সদর দফতরের ল ফুল ইন্টারসেপশন সেলের (এলআইসি) সদস্যরা সোমবার রাত ৯টার দিকে ওই বাড়ি দুটি ঘিরে ফেলেন। পরে র‌্যাব তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। মঙ্গলবার ভোরে সোয়াত সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।

এর মধ্যে মাধবদী পৌরসভার ছোট গদাইরচরের সাত তলা নিলুফা ভিলার মালিক হাজী মো. আফজাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। ওই ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে পুলিশের ধারণা। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত রয়েছে মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসা।

আর শেখেরচরের ভগীরথপুরের পাঁচ তলা বাড়িটির মালিক বিল্লাল হোসেন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী। ওই ভবনের পঞ্চম তলায় এক নারীসহ দুই জঙ্গি অবস্থান করছে বলে খবর রয়েছে পুলিশের কাছে। ভবনটির ছাদেও পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

ভগীরথপুরের বাড়িটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে দুশ মিটারের মধ্যে। সেখান থেকে মোটামুটি দুই কিলোমিটার দূরত্বে ছোট গদাইরচরের বাড়িটি। দুটি বাসাই এ মাসের ৭ তারিখে ভাড়া নেয়া হয়েছে বলে বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার পর দুই বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি এনে রাখা হয়েছে দুই বাড়ির কাছাকাছি।

সকালে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যদেরও সেখানে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল্লাহ আল মামুন এবং নরসিংদীর সিভিল সার্জনও উপস্থিত হয়েছেন মাধবদীতে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here