খবর ৭১ঃ কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় নবম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। জমিতে কাজ করার সময় কৃষক বাবাকে ভাত খাইয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুমন সরকার (২৯) নামে এক যুবক তাকে ধর্ষণ করে।
গত শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার মাথাভাঙা ইউনিয়নে একেবারে খোলা জায়াগায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষক সুমন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হোমনা থানায় গণধর্ষণ, মাদক ও মারামারিসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে। সে উপজেলার দাড়িগাঁও গ্রামের মো. রেজাউল করিম ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে হোমনা থানায় সুমনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। কিন্তু মামলা করায় ছাত্রীর বাবা-মাকে সুমনের পরিবার নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে বলে দাবি করছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মেয়েটি উপজেলা সদরের একটি দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। অবসরে বাবা-মার কাজেও সহায়তা করে থাকে সে। ওই দিনও কৃষক বাবা জমিতে কাজ করছিলেন। তাই বাবার জন্য সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জমিতে খাবার নিয়ে গিয়েছিল সে। সকাল ১১টায় বাবাকে খাবার খাইয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুমন তাকে ধর্ষণ করে। এমনকি ঘটনাটি কারও কাছে প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেয়।
পরে মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাছে বিষয়টি জানায়। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি কাউকে জানায়নি তার পরিবার। তবে এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে বলে শোনা গেছে। পরে গত শনিবার রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে হোমনা থানায় ধর্ষণ মামলা করলে ঘটনা জানাজানি হয়।
ভিকটিমের বড় ভাই বলেন, ‘মামলা করার পর থেকে সুমন ও তার লোকজন আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। সুমন খুব খারাপ মানুষ। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করুক। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।’
মাথাভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজিরুল হক ভূইয়া জানান, সুমন এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এই ধরনের ঘটনা কোনোভাবে মানতে পারি না। আমি সুমনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
হোমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী নাজমুল হক জানান, সুমন এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এর আগেও তার বিরুদ্ধে থানায় একটি গণধর্ষণের মামলা, তিনটি মাদক ও তিনটি মারামারিসহ সাতটি মামলা রয়েছে।
ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুমনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।