নবজাতক ঠিক এলিয়েন-এর মতো!

0
1224

খবর ৭১:আঁতকে ওঠার মতো চেহারা। দেখতে আমানবিয়। এক্কে বারে ভিন গ্রহের বাসিন্দাদের কাল্পনিক ছবি। তাহলে কি এলিয়েন? সম্ভবত! ব্যাস, রটল খবর। গুজব, মর্তে ভিন গ্রহের প্রাণী! আর তাতেই হইচই। তোলপাড় গ্রাম। সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব নিলেন কলকাতার জলপাইগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, কোনও ভিনগ্রহের প্রাণী নয়। নবজাতক আসলে কলোডিয়ান শিশু। চর্মগত বিকৃতি নিয়ে জন্মানো এই শিশুকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় এখন দিনরাত এক করে দিয়েছেন ডাক্তার, নার্স ও কর্মীরা।

গত রবিবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালের মাদার এন্ড চাইল্ড হাবে শিশুটির জন্ম দেন গৃহবধূ রেখা রায় (১৯)। স্বামী দুলাল রায় পেশায় ট্রাক চালক। এক বছরের দাম্পত্য জীবনে এটিই তাদের প্রথম সন্তান। স্বাভাবিক ভাবেই পুত্র সন্তানের জন্মানোর খবরে আপ্লুত ছিলেন দুজনেই। কিন্তু, সন্তানের মুখ দর্শনেই চমকে উঠেছিলেন দম্পতি। তবে, নিজেদের সন্তান বলে কথা। আশ্বস্ত করেছিলেন চিকিৎসকরা।

জন্মের পরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে। সেখানেই শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় লেগে রয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের বক্তব্য, এটি একটি বিরল রোগ। কয়েক লক্ষ শিশুর মধ্যে একজন শিশু এমন রোগের লক্ষণ নিয়ে জন্ম নিয়েছে।

হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর জানান, ডাক্তারি পরিভাষায় এই ধরনের শিশুকে বলা হয় কলোডিয়ান বেবি (collodian baby)। জিনগত কারনেই এই রোগ দেখা দেয়। চামড়ার জটিল সমস্যা নিয়ে জন্মনেয় কলোডিয়ান শিশুরা। চামড়ায় ইলাস্টিসিটি না থাকার জন্যই ফাটতে থাকে শরীর। শরীরের প্রয়োজনীয় অংশগুলির সময় মতো বহিঃপ্রকাশ হয়না। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের ইতিহাসে জন্ম নেওয়া এটিই প্রথম কলোডিয়ান বেবি। হাসপাতাল সুপার জানান, শিশুটিকে সুস্থ শরীরে পরিবারের হাতে তুলে দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

সুপার বলেন, ইতিমধ্যেই শিশু রোগ এবং চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে। তাদের তত্বাবধানেই শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রথম দিন থেকেই শুধু কেঁদেই চলেছেন প্রসুতি। অনেকে অনেক কথাই বলছেন। কিন্তু সন্তানতো আমার।

প্রসুতির মা জানান, সব যন্ত্রণা আমাকেই সইতে হচ্ছে। কেউ বলছেন গ্রহের খাবার খেয়ে ফেলেছি। কারও বক্তব্য, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারনেই এই ঘটনা। স্বস্থি একটাই পাশে পেয়েছেন স্বামীকে। রেখা দেবী বলেন, আমি চাই ডাক্তার বাবুরা আমার ছেলেকে সুস্থ করে আমার কোলে তুলে দিন। সে যেমন চেহারারই হোক! সন্তা তো আমারই। এখনও ডাক্তারেরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন নবজাতককে বাঁচিয়ে রাখতে। সূত্র: কলকাতা ২৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here