ধীরে ধীরে বিশ্ব বাজারে অবস্থান নিচ্ছে বাংলাদেশের বোতাম

0
1359

খবর৭১:বাংলাদেশের বোতাম ধীরে ধীরে বিশ্ব বাজারে নিজের অবস্থান সংহত করে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এ খাতে বিদেশ থেকে রপ্তানি আয় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ বোতাম প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি সূত্র জানায়, বোতাম প্রস্তুতকারক বেশিরভাগ কারখানাই সাভার, গাজীপুর আশুলিয়া, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত।

সীত্র মতে, সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়ার কারণে হালে পোশাকে ব্যবহৃত হচ্ছে হরেক ডিজাইনের বোতাম। আগে যেসব পোশাকে বোতাম ব্যবহৃত হতো না, এখন সেগুলোয়ও ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ডিজাইনেও এসেছে জমকালো পরিবর্তন। সেই বোতাম এখন বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজরে রপ্তানি হচ্ছে। এ খাতে দেশের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ দেশীয়ভাবে মেটানো হয়। বাকি ৪০ শতাংশ ক্রেতাদের শর্ত অনুযায়ী আমদানি করতে হয়। তবে সব মিলিয়ে দেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বোতাম রপ্তানি হচ্ছে।

সূত্র মতে, বাংলাদেশে ছোট বড় মিলিয়ে ৪৭টি বোতাম কারখানা আছে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। গত বছর এ খাতে আরও প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। দেশের চাহিদা ও রপ্তানির আদেশ বাড়ার কারণে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে তারা চলমান কারখানাকে আরও সম্প্রসারণ করছেন। অনেকে নতুন কারখানা করছেন।

এক সময় শুধু সাদা রঙের বোতাম তৈরি হতো বাংলাদেশে। এখন বোতামের রঙে যেমন বৈচিত্র্য এসেছে, তেমিন এর ডিজাইনেও বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। চোখধাঁধানো রং-বেরঙের ডিজাইনের বোতাম তৈরি হচ্ছে। প্রতিমিনিটে দেশের কারখানাগুলোয় ২০০ থেকে ৩০০ বোতাম উৎপন্ন হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতিমাসে দেশের কারখানাগুলোয় ১৩০ থেকে ১৫০ কোটি টাকার বোতামের চাহিদা রয়েছে। দেশী কারখানগুলো জোগান দিচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ কোটি টাকার বোতাম। এই হিসাবে বছরে দেশী কারখানাগুলোর হাজার কোটি টাকার বোতাম ব্যবহার করছে গার্মেন্টস শিল্প। এর বাইরে আরও হাজার কোটি টাকার বোতাম বিদেশের বাজাওে রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, শ্রীলংকা, ভিয়েতনামে রপ্তানি কোটি টাকার। স্থানীয় উৎপাদকরাই সরবরাহ করছে বেশি। এসব দেশ উঁচু দামের পোশাক তৈরিতে বাংলাদেশী বোতাম ব্যবহার করে। যে কারণে এসব দেশে বাংলাদেশের বোতামের চাহিদা বাড়ছে।

সূত্র মতে, বোতাম তৈরিতে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির পাশপাশি দেশীয় কাঁচামালও ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশীয় কাঁচামালের মধ্যে রয়েছে শামুক, ঝিনুক, গবাদিপশুর হাড়, নারিকেলের ছোবড়া, গরু-মহিষের খুর, চামড়ার বর্জ্য অংশ ইত্যাদি। এ ছাড়া চীন ও ভারত থেকে কাঁচামাল হিসেবে বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য আমদানি করা হয়।

সূত্র জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৬০ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪৫০ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫৮৫ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৮৫০ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ১৪৪ কোটি টাকার বোতাম দেশের গার্মেন্টসগুলোয় জোগান দেয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় পোশাকশিল্পকে আমলে নিলে এর পরিমাণ আরও বেশি হবে।

উদ্যোক্তারা জানান, তারা দেশীয় চাহিদার পুরোটাই জোগান দিতে পারবেন। কিন্তু পোশাকের ক্রেতাদের শর্ত অনুযায়ী অতি উচ্চমানের বোতাম কিছু ক্ষেত্রে সরবরাহ করতে হয়। এ কারণে পোশাক প্রস্তুতকারকরা বিদেশ থেকে বোতাম আমদানি করতে বাধ্য হন। এলসি খোলার সময় এই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here