দেশের মানুষ দু’টি দলকে আর চায় না-মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

0
690

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেছেন-জাতীয় পার্টি ছাড়া রাজনীতির সমিকরণ হবে। আর পার্টি যদি সুসংগঠিত থাকে, ঐক্যবন্ধ থাকে তবে আমাদেরকে কেউ ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে পারবেনা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু কার অবদান? এটি সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু আলহাজ¦ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবদান। জাতীয় পার্টির অবদান। এদেশে উন্নয়নের ধারা তার সময়েই শুরু হয়। দেশে ২১টি জেলা থেকে ৬৪টি জেলা করেছিলেন। উপজেলা এগুলো তিনিই করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন উপজেলা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ৯ বছরে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকতে দেশকে অনেক কিছুই দিয়েছে। পল্লীবন্ধু মানুষের জন্য কাজ করেছেন। অথচ সাবেক একজন রাষ্ট্রপতির ঢাকা শহরে কোন বাড়ি নেই। তিনি একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। এটি পৃথিবীতে বিরল। মানুষ এখন বুঝতে পারছে জাতীয় পার্টি ছাড়া উপায় নেই। হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তা আল্লাহ ভাল জানেন। রাজনীতিতে উত্থান পতন আছে। আমরা সংগ্রাম করে চলেছি। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ দু’টি দলকে আর চায়না। তারা আবার এরশাদের সুশাসন চায়। এ দু’টি দলের কারণে দেশে উন্নয়ন হয়নি। তাদেরকে আর নয়, এখন জাতীয় পার্টির প্রয়োজন। অভিযুক্ত দু’টি দল আপনারা চলে গেলে ভাল। তিনি বলেন, এরশাদের হিংসা বিদ্যেষ নেই। তিনি কাউকে জেলে পাঠাতে চাননা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই তার একমাত্র উদ্দেশ্য। মহাসচিব বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে ছাত্রদের চাকরি হবে। তাদেরকে আর আন্দোলন করতে হবেনা। সড়ক অবরোধ করতে হবেনা। তারা ঘরে ফিরে যাবে। পড়াশুনায় মনযোগি হবে। মানুষ শান্তিতে থাকবে। তিনি বলেন, আমরা কাজ করলে কারও সাথে জোট করতে হবেনা। লাঙ্গল একটি পরিচিত মার্কা। মানুষ লাঙ্গলকে ভোট দেবে। আরো বলেন-পল্লীবন্ধু এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় হবিগঞ্জকে মহকুমা থেকে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি মৌলভীবাজার একটি ছোট থানা ছিল সেটি তিনি জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এভাবে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন-পল্লীবন্ধু এরশাদ যখন জেলে ছিলেন তখন হবিগঞ্জের মানুষ উনার পাশে ছিলেন। এখনও হবিগঞ্জের জনগণ পল্লীর পাশে রয়েছেন। ভবিষ্যতে হবিগঞ্জের জনগণ পল্লীবন্ধু পাশে থাকবেন। তিনি আরো বলেন-হবিগঞ্জের ৪টি আসনে আমাদের শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে। তাদের নির্বাচিত করার জন্যও তিনি আহ্বান জানান। সম্মেলন শেষে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহা-সচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন-আমরা একক ভাবে নির্বাচনের জন্য ৩শ আসনে যাচাই বাছাই করে প্রার্থী চুড়ান্ত করেছি। যখন জোটের বিষয়টি উত্থাপিত হবে তখন পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বসে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শংকর পালের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, এসএম ফয়সল চিশতী, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু. জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্ঠা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু এমপি, হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান, জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মুক্তাদীর চৌধুরী অপু, প্রকৌশলী এমএ মুমিন চৌধুরী বুলবুল, আব্দুল জলিল তালুকদার, মীর জিয়াউল হক জিয়া, শাহ আবুল খায়ের, কাপ্তান সারোয়ার, আব্দুস সালাম মেম্বার, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কাজল আহমেদ, প্রভাষক এসএম লুৎফুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ময়না, গাজী মিসবাহ উদ্দিন, মুখছুদুজ্জামান খান, কদর আলী মোল্লা, মিজানুর রহমান দুলাল, আব্দুস সালাম তালুকদার, মুরাদ আহমেদ, জুবায়েদ হোসেন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফন্ট হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি অধ্যাপক্ষ মাওলানা শহিদুল ইসলাম। পরে দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি জেলা সভাপতি হিসেবে মো. আতিকুর রহমান আতিক ও সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদের নাম ঘোষণা করেন। এছাড়াও জেলা উপদেষ্ঠা হিসেবে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু এমপি নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। সভায় জাতীয় পার্টির জেলা ও উপজেলা নেতা বলেন-বিগত নির্বাচনে বানিয়াচঙ্গ-আজমিরীগঞ্জ আসনে জাতীয় পার্টির শংকর পাল নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামীলীগ ভোট ডাকাতির মাধ্যমে তাকে পরাজিত করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ওই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শংকর পালই নির্বাচিত হবেন। আরো বলেন-একই ভাবে হবিগঞ্জ সদর-লাখাই আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিককে পরাজিত করা হয়েছিল। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সকল আসনেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। সভায় সভাপতির বক্তব্যে আতিকুর রহমান আতিক জাতীয় পার্টি একটি শান্তি পূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন। জাতীয় পার্টির আমলেই দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষ করে হবিগঞ্জের রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভাট, স্কুল, কলেজ নির্মিত হয়েছিল। এজন্য হবিগঞ্জের জনগণ জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে বার বার নির্বাচিত করেছেন। এজন আমরা হবিগঞ্জ জেলাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। এছাড়াও সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে জেলা জাপার সদস্য সচিব শংকর পাল দলের নেতাকর্মীরা প্রার্থী নিয়ে যাতে বিভ্রান্তে না পড়েন, এ জন্য হবিগঞ্জের ৪টি আসনের প্রার্থী নাম ঘোষণা করার দাবি জানান। জাপা নেতা শংকর পালের দাবি সাথে এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু একমত প্রকাশ করেন। এর পূর্বে সম্মেলনস্থলে জেলা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন উপজেলার জাপার নেতারা মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসেন। সকাল ১১টায় মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ অতিথিবৃন্দ হেলিকাপ্টার যোগে এসে কেন্দ্রীয় ঈদগাহে অবতরণ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here