দুই সিটির ফল প্রত্যাখ্যান বিএনপির, বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ

0
375

খবর৭১ঃ রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে আগামী বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) দেশব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘জনগণ তিন সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের সীমাহীন ভোট কারচুপি ও জবরদখল দেখেছে। এই সরকার এবং নির্বাচন কমশিন আবারও প্রমাণ করেছে, তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাজশাহী ও বরিশালের ভোটের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। কারণ, এটা কোনো নির্বাচনই হয়নি। ভোট চুরি নয়, ডাকাতি প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। ভোট কারচুপির প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার সারাদেশের জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ করা হবে।’

এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘সিলেটেও ব্যাপক ভোট কারচুপি হয়েছে। তা নাহলে আরিফুল হক লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতেন’।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘গতকাল রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই ৩টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের নাটক শেষ হলো। এই নির্বাচনে আমাদের কথাই সত্য প্রমাণিত হলো-শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না। প্রমাণিত হলো এই অযোগ্য নির্বাচন কমিশিনের পরিচালনায় কোন নির্বাচনেই জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়’।

গাজীপুর ও খুলনার মতো এই তিনটি সিটি কর্পোরেশনে ভোট চুরি বা কারচুপি নয়, ভোট ডাকাতির মহাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নয়, প্রতিপক্ষ এই অবৈধ সরকারের প্রশাসন এবং অযোগ্য নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন পুলিশের মতোই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। শুধু নির্বাচনের দিনে নয়, সিডিউল ঘোষণার দিন থেকেই পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড মাঠে নেমেছে’।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন,‘এই নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকেই আমরা বলে এসেছি-এই কমিশন আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত দুষ্ট এবং অযোগ্য। তারা আচরণ বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের নির্যাতন বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মানতে পুলিশকে বাধ্য করতে পারেনি’।

তিনি বলেন,‘শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করছে। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করছে। লক্ষ্য একটি-একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভিন্নরুপে প্রতিষ্ঠা করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা। আওয়ামী লীগ এখন একটি গণবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে তারা জয়ী হতে পারবে না বলেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করে তারা জাতীয় সংসদের নির্বাচন করতে চায়। ২০১৪ সালের মতোই একতরফা নির্বাচন করার নীল নক্শা করছে। জনগণ তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দিবে না’।

তিনি আরও বলেন,‘দেশে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমেই গণতন্ত্রের মাতা আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলীয় সকল বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করতে হবে। বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। সরকারকে আহবান জানাবো কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে আামদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে’।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here