দুই জোট নিয়ে অলির অভিযোগ

0
494

খবর৭১ঃ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০দলীয় জোটের অধিকাংশ নেতারা একাদশ নির্বাচনে সরকারের সাথে আঁতাত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির অন্যতম মিত্র লিবারেল ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ।

শনিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

অলি বলেন, ‘ড.কামাল সাহেবের সাথে যারা আছেন তাদের অনেকে সরকারের কাছ থেকে পয়সা নিয়েছে। কোন বাসায় পয়সা নিয়েছে কে নেগোসিয়েট করেছে এই তথ্যগুলো আমার কাছে আছে এবং ২০ দলীয় ঐক্যজোটের অনেকে পয়সা নিয়েছে। তা না তাহলে এভাবে আমাদের ওপর নির্যাতন হতো না।’

তিনি বলেন, ‘আজকে পুলিশ দেশ চালাচ্ছে। তারা এমপি-মন্ত্রীদের কথা শুনছে না। কারণ আজকে পুলিশ দেশ চালাচ্ছে। কারণ পুলিশে বলে, তোরা এমপি হস নাই। এমপি তো আমরা তোদের বানিয়েছি, জনগণ তো তোদের এমপি বানায়নি।’

আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মত উপজেলা নির্বাচনেও রাতে ভোট কাটছে অভিযোগ করে ২০দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে অবশ্যই আমাদেরকে মুক্ত হতে হবে। সাহসী লোকের প্রয়োজন। সাহস নিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের যে অধিকার যেটা হরণ হয়েছে সেটা পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদেরকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এখানে অমুকের দ্বারস্থ, তমুকের দ্বারস্থ হলে হবে না। নিজের যেটা আছে সেটাকে কাজে লাগাতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।’

অলি বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে আগামী এক বছরের মধ্যে এই সরকারকে নির্বাচন দিতে আমরা বাধ্য করতে পারবো এবং এটা কঠিন কাজ নয়। ১৫০/১৬০জন লোক ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে সংগ্রাম করলে অচিরেই এদেশে পুনরায় নির্বাচন অসম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘১৯ বার ক্যু হয়েছে। ১৯ বার মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছি। এখনও বেঁচে আছি, নিশ্চয়ই কোনো কাজ আল্লাহ আমাকে দিয়ে করাবেন। সেই অপেক্ষায় আছি।’

রাজনৈতিক নেতৃত্বে নয় সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে স্বাধীনতা এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন লোকেরা বই লিখছে, যারা যুদ্ধ দেখে নাই, যুদ্ধের মাঠ থেকে পালিয়ে গেছে তারাও এখন বই লিখছে। অনেক শিক্ষকেরা যারা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কিছুই জানে না তারাও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বই লিখেছে। সত্য কথা হলো সামরিক বাহিনীর সদস্যরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। তাদের সাথে প্রথমে যোগদান করেছে তৎকালীন ইপিআরের সদস্যরা, পুলিশ, ছাত্র, বিশেষ করে ছাত্র-শ্রমিক সেদিন যদি না আসতো তাহলে আমদের পক্ষেও এদেশ স্বাধীন করা সম্ভব হতো না। এক পর্যায়ে কিছু সংখ্যক লোক ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশের লোক এই স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য পরিশ্রম করেছে আত্মত্যাগ করেছে। এটা শুধু কয়েকজন রাজনীতিবিদের কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।’

অলি বলেন, ‘ওই সময়ে যারা খাদ্যগুদামের দায়িত্বে ছিলো, তারা এখন স্বাধীনাত পুরস্কার পাচ্ছে। এখনও আমরা যারা জীবিত আছি। যুদ্ধের জন্য প্রাণ দিতে গিয়েছিলাম, আমাদেরতো সেই স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে না। কারণ এটা দলের বাইরে কোনো কাজ হচ্ছে না। দলকে দিয়ে যদি করে তাহলে একদিন না একদিন বিপদে পড়বেন। আমি আশা করবো যারা সরকারে আছেন তারা এ কথা উপলব্ধি করবেন।’

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে অলি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের লোকেরা যে ন্যাক্কারজনক কাজটা করেছে। মানুষ ১০জন লোকের কাছে অভিশপ্ত হতে পারে, ১০হাজার লোকের কাছে অভিশপ্ত হতে পারে বর্তমান সরকার ১৮ কোটি মানুষের কাছে অভিশপ্ত। কারণ ১৮ কোটি মানুষ ভোটের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। তাদের বাঁচার অধিকার নাই। তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নাই, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নাই।’

অলি আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের জন্য যে অবদান রেখেছে, আমি বলবো না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়ে বেশি রেখেছে। দুইজনই বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করেছেন। দুইজনকে সম্মান করা উচিত। তাদের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য রেখে মিথ্যা কথা বলে দেশের লোককে বিভ্রান্ত করা ঠিক না।’

এলডিপি মহাসচিব ড. রোদোয়ান আহমেদ এর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম বীর প্রতীক, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন, গোলাম মাওলা রনি প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here