দীর্ঘক্ষণ একইভাবে বসে থেকে কাজ করলে হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে!

0
487

খবর ৭১:দীর্ঘক্ষণ একইভাবে বসে থাকলে, কিংবা পা ভাঁজ করে বসে থাকলে হঠাৎ মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এমনটাই বলছে এক সমীক্ষা।

সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণের বিমান যাত্রাও বিপদের কারণ হতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম পালমোনারি এমবয়লিজম।
দীর্ঘক্ষণ একইভাবে বসে থাকলে, কিংবা পা ভাঁজ করে বসে থাকলে, পা-এর শিরায় রক্তের প্রবাহ মাত্রা কমে যায়। এমনকি রক্ত জমাট পর্যন্ত বেধে যেতে পারে। যাকে বলা হয় ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস। কোনো পূর্ব অনুমান ছাড়াই, জমাট বাধা রক্ত ভেঙে গিয়ে শিরার মাধ্যমে ফুসফুস এমনকি হৃদযন্ত্রেও যেতে পারে। যার ফলে হঠাৎ দেহের অঙ্গগুলি কাজ করা বন্ধও করে দিতে পারে।

টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয়া এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন। যদিও তাঁদের সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি নির্ণয় করা গিয়েছিল এবং চিকিৎসাও শুরু হয়ে যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপির নেসোবা কাউন্টি জেনারেল হাসপাতালের অস্থি বিশেষজ্ঞ সুনীল কুমার বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছেন।

এই চিকিৎসকের মতে, এইসব ক্ষেত্রে যদি চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়, তাহলে মৃত্যুর হার প্রায় ৪০ শতাংশ। খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সারিয়ে তোলা যায়। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়ও আছে। এমনকি জীবন রক্ষাও করা যায়।

তবে, তার জন্য রোগের উপসর্গের দিকে নজর রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য, চিকিৎসক সুনীল কুমার মোবাইল অ্যাপ-এর উদ্যোগ নিয়েছেন। যার নাম ‘শেক ইট’। যা গুগল প্লে-স্টোর থেকে পাওয়া যাচ্ছে একেবারে বিনামূল্যেই। আমেরিকায় কার্ডিওভাসকিউলার ডেথের ক্ষেত্রে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস এবং পালমোনারি এমব্রয়লিজম অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। প্রায় ৬ লাখের বেশি মানুষ প্রতিবছর এই রোগে আক্রান্ত হন।

সচেতনতার উদ্যোগের অভাবেই এই ঘটনাটি ঘটছে বলে মত চিকিৎসক মহলের। এ প্রসঙ্গে দুজনের উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে। দুই ব্যক্তি হলেন আশিষ কুমার এবং আব্দুস সাত্তার। আটলান্টিকের ওপর দীর্ঘসময় বিমানে ভ্রমণ করে নিউ ইয়র্কের বাড়িতে পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আশিষ কুমার। দীর্ঘক্ষণের বিমান যাত্রার ফলে তিনি চলাফেরাও করতে পারেননি। তাঁকে বাঁচানোর মতো সময়ও পাওয়া যায়নি।

কয়েক মাস আগে একইভাবে মৃত্যু হয়েছিল ভারতের সরকারি কর্মী আব্দুস সাত্তারের। অডিট দপ্তরের অফিসার হিসেবে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকতে হত। কাজ করতে করতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর মৃত্যু হয়।

পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল, তাঁর ফুসফুসে রক্ত জমাট বেধে গিয়েছিল। যা হয়েছিল পালমোনারি এমবয়লিজমের ফলেই। দেরি হয়ে যাওয়ায় জমাট বাধা রক্ত তাঁর কার্ডিও পালমোনারি ফাংশনকে স্তব্ধ করে দেয়।

প্রাথমিক ভাবে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস নির্ণয়ের উপায়ও জানিয়েছে এশিয়ান ভাসকিউলার সোসাইটি। পা ফুলে যাওয়া দিয়ে শুরু হবে, শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে, বুকে একটা অস্বস্তিও থাকবে, রক্তচাপও অনিয়মিত থাকবে।

পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়ও আছে। হাঁটাহাটি করতে হবে, চারপাশে ঘুরতে হবে, ওজন কমাতে হবে, ধূমপান ছাড়তে হবে, ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here